পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংল-শিক্ষা প্রচলনে বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টা
৪৩

 সার হেনরি হার্ডিঞ্জের স্থাপিত স্কুলগুলি সফলতা লাভ করিতে পারে নাই। ইহা দেখিয়াও বিদ্যাসাগর দমিলেন না। তিনি মডেল স্কুল গুলিকে সার্থক করিবার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করিতে লাগিলেন। পাঠ্যপুস্তক-প্রণয়নেও তিনি লাগিয়া গেলেন। এত চেষ্টা, এত পরিশ্রম সুফলপ্রসূ না হইয়া পারে না। কার্যসূচনার তিন বৎসর পরে তিনি যে রিপোর্ট লিখিলেন, তাহাতে সফলতার পরিচয় পাওয়া যায়।—

“প্রায় তিন বৎসর হইল মডেল বঙ্গবিদ্যালয়গুলি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। এই অল্প সময়ের মধ্যেই স্কুলগুলি সন্তোষজনক উন্নতিলাভ করিয়াছে। ছাত্রগণ সকল বাংলা পাঠ্যপুস্তকই পাঠ করিয়াছে। ভাষার উপর তাহাদের সম্পূর্ণ দখলের পরিচয় পাওয়া যায়। প্রয়োজনীয় অনেক বিষয়েও তাহার জানলাভ করিয়াছে। “গোড়ায় অনেকে সন্দেহ করিয়াছিল, মফঃস্বলের লোকেরা মডেল স্কুলগুলির মর্ম্ম বুঝিবে না। প্রতিষ্ঠানগুলির পূর্ণ সার্থকতা এই সন্দেহ দূর করিয়াছে। যে-যে স্থানে স্কুলগুলি প্রতিষ্ঠিত, সেইসব গ্রামের এবং তাহাদের আশপাশের পল্লীবাসীরা এই বিদ্যালয়গুলি অতি উপকারী বলিয়া মনে করে; ইহার জন্য সরকারের কাছে তাহারা কৃতজ্ঞ। স্কুলগুলির যে যথেষ্ট আদর হইয়াছে, ছাত্রসংখ্যাই তাহার প্রমাণ।”[১]

 বিদ্যাসাগরের যত্ন-চেষ্টায় অনেকগুলি বিদ্যালয়ের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হইয়াছিল। পাইকপাড়া রাজাদের প্রতিষ্ঠিত (১ এপ্রিল, ১৮৫৯) কাঁদির ইংরেজী-সংস্কৃত স্কুল তাহাদের অন্যতম। কিছুদিন তিনি ইহার অবৈতনিক তত্বাবধায়ক ও ছিলেন। মেদিনীপুর ঘাটাল অঞ্চলে

  1. General Report on Public Instruction,'’ etc., for 1857-58, App. A, pp. 178-80.