পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

লোকে ওখানে রাখিয়া দিবে। বিক্রয় হইলে কিছু আড়তদারী বা কমিশন লইয়া গ্রন্থকারকে সমস্ত টাকা দিয়া দিবেন। এই সংস্কৃত প্রেস ডিপজিটারী তাঁহার হাত হইতে চলিয়া গিয়াছে; ইহা এখনও বর্তমান আছে;— কিন্তু উহার হিসাব রাখার নিয়ম খুব সুন্দর, যখনই যাও, আগের মাস পর্য্যন্ত যত বই বিক্রয় হইয়াছে তাহার হিসাব পাইবে এবং চাহিলেই তোমার যা পাওনা তাই দিয়া দিবে।

 সাংসারিক কাজে বিদ্যাসাগরের দূরদৃষ্টির আর একটি উদাহরণ দিব। বিদ্যাসাগর দেখিতেন—বাড়ির রোজগারী পুরুষ মরিয়া গেলে বিধবার এবং বিধবার ছেলেপুলের বড়ই কষ্ট হয়; তাই তিনি নবীনচন্দ্র সেনের সঙ্গে মিলিয়া হিন্দু ফ্যামিলী এ্যানুইটি ফণ্ডের সৃষ্টি করেন (১৮৭২)। স্বামী যতদিন জীবিত থাকিবেন—মরিলে স্ত্রীর ভরণপোষণের জন্য কিছু কিছু টাকা ফণ্ডে দিবেন; তিনি মরিয়া গেলে ফণ্ড মাসে মাসে স্ত্রী যতদিন বাঁচিয়া থাকিবেন, ততদিন তাঁহাকে একটা মাসহারা দিবেন। এইরূপে ভদ্রঘরের কত বিধবা যে এই ফণ্ডের মাসহারা লইয়া জীবনধারণ করিতেছেন, তাহা বলা যায় না। তিনি ফণ্ডের এমন বন্দোবস্ত করিয়া গিয়াছেন এবং এই ষাট বৎসরে এত টাকা জমিয়া গিয়াছে যে তাহার সুদ হইতে ফণ্ডের সমস্ত খরচ চলিয়া যায়, এবং মাসিক চাঁদা সমস্ত জমিয়া যায়। এইরূপে অনেক টাকা জমিয়া গিয়াছে। মূল টাকা গবর্ন্মেণ্ট অফ্ ইণ্ডিয়ার হাতে থাকে। এ ফণ্ড ফেল হইবার কোনো সম্ভাবনা নাই।

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের আর এক কীর্তি সোমপ্রকাশ। বিদ্যাসাগর মহাশয় দেখিতেন—যে-সকল বাংলা কাগজ ছিল, তাহাতে রকম খবর দিত; ভাল খবর থাকিত, মন্দ খবরও থাকিত। লোকের কুৎসা করিলে কাগজের পসার বাড়িত, অনেক সময় কুৎসা করিয়া তাহারা পয়সাও রোজগার করিত। বিদ্যাসাগর মহাশয় দেখিলেন যদি কোনো কাগজে ইংরেজীর মত রাজনীতি চর্চ্চা করা যায়, তাহা