পাতা:বিদ্যাসাগর-প্রসঙ্গ.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্ত্রীশিক্ষা-বিস্তারে বিদ্যাসাগর
৫৯
কমিটি আনন্দানুভব করিতেছেন। বিশেষভাবে বীটন স্কুলের হিতকর প্রভাবই যে ইহার কারণ—ইহাই কমিটির বিশ্বাস।”[১]

 মিস মেরী কার্পেণ্টারের নাম এদেশে মানবহিতৈষী কর্মী ও ভারত-বন্ধু বলিয়া সুপরিজ্ঞাত। ১৮৬৬ খৃষ্টাব্দের শেষাশেষি তিনি কলিকাতায় আসেন। ভারতবর্ষে নারী-শিক্ষার প্রচার ছিল তাঁর প্রাণের ইচ্ছা। বিদ্যাসাগর যে স্ত্রীশিক্ষা বিস্তার কার্য্যে একজন বড় কর্ম্মী, একথা সুবিদিত। মিস কার্পেণ্টার কলিকাতা পৌঁছিয়াই পণ্ডিতের সহিত পরিচিত হইবার জন্য ব্যগ্র হইয়া উঠিলেন। ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইন্‌স্ট্রাকশন অ্যাটকিনসন্ সাহেব বে-সরকারী পত্রে বিদ্যাসাগরকে জানাইলেন,—

প্রিয় পণ্ডিত মহাশয়,—মিস কার্পেণ্টারের নাম শুনিয়া থাকিবেন। তিনি আপনার সহিত পরিচিত হইতে, এবং স্ত্রীশিক্ষার উন্নতি বিষয়ে তাঁহার অভিপ্রায় জানাইতে ইচ্ছুক....। (২৭ নভেম্বর, ১৮৬৬)

 ডিরেক্টর বীটন বিদ্যালয়ে মিস কার্পেণ্টারের সহিত পণ্ডিতের পরিচয় করাইয়া দিলেন। প্রথম আলাপেই উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপিত হইল। তিনি বিদ্যাসাগরের সহিত কলিকাতার নিকটবর্ত্তী বালিকা বিদ্যালয়গুলি পরিদর্শন করিলেন। ১৮৬৬ ডিসেম্বর মাসে ডিরেক্টর অ্যাটকিনসন্, স্কুলইন্‌স্পেক্টার উড্রো এবং পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্রের সহিত মিস কার্পেণ্টার উত্তরপাড়া বালিকা বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। ফিরিবার মুখে বিদ্যাসাগরের বগী গাড়ি উল্টাইয়া যায়। তিনি পড়িয়া গিয়া যকৃতে গুরুতর আঘাত পান। এই দুর্ঘটনার ফলে তাঁহার স্বাস্থ্য একেবারে ভাঙিয়া যায়। যে সাঙ্ঘাতিক ব্যাধি শেষে ১৮৯১, জুলাই মাসে তাঁহাকে মৃত্যুপথে লইয়া যায়, এই দারুণ আঘাতই তাহার মূল কারণ। কিন্তু


  1. Education Con. Decr. 1862, Nos. A. 59-62.