পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সপ্তদশ অধ্যায়।

বিধবা বিবাহ।[১]

 এইবার সেই বিরাট ব্যাপার। তাহাতে হিন্দুসমাজে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ঘোরতর অখ্যাতি; এবং অহিন্দু ও অহিন্দুভাবাপন্ন সমাজে যথেষ্ট প্রতিপত্তি; সুতরাং যাহার জন্য তাঁহার নাম বিশ্বব্যাপী; এবার সেই বিধবা-বিবাহের কথা আসিয়া পড়িল। এ সম্বন্ধে এ ক্ষেত্রে সবিস্তর সমালোচনার স্থান হইবে না; তবে এইখানে এই পর্য্য়ন্ত বলাই পর্য্য়াপ্ত যে, তিনি এতদর্থে যেরূপ অটুট। অধ্যবসায়-সহকারে অবিশ্রান্ত পরিশ্রম করিয়াছিলেন, তদনুরূপ ফলপ্রাপ্ত হন নাই। এ অহিন্দু আচার হিন্দুসমাজে যে অনুপ্রবিষ্ট হয় নাই, ইহা হিন্দুসমাজের সম্যক্‌ সৌভাগ্যের পরিচয় বলিতে হইবে। কারুণ্য-প্রাবল্যে বিদ্যাসাগর মহাশয় আত্মসংযমে সমর্থ হন নাই। তাই তিনি ভ্রান্ত বিশ্বাসের বশে এই অকীর্ত্তিকর কার্য্য়ে হস্তক্ষেপ করিয়াছিলেন। তিনি বিধবা-বিবাহের শাস্ত্রীয় প্রমাণ সংগ্রাহার্থ শাস্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। এই জন্য অনেকে তাঁহাতে শাস্ত্রানুরাগিতা আরোপিত করেন; কিন্তু অনেকে তাহা স্বীকার করেন না। শেষোক্তের মতে তিনি স্বেচ্ছাক্রমে শাস্ত্রের কদর্থ করিয়াছিলেন। আমাদের মতে, তিনি স্বেচ্ছামতে ও সজ্ঞানে

  1. হিন্দু রমণীর একবার বিবাহ হইবার পর আর বিষাহ হইতে পারে না। হিন্দু বিবাহের পবিত্র ভাগ হিন্দু বুঝে। হিন্দু স্ত্রী-স্বামীর সম্বন্ধ ইহ পরকালের। হিন্দু রমণীর পতিবিয়োগের পর বিবাহ হইতে পারে না; সুতরাং 'বিবাহ’ কথার প্রয়োগ করা চলে না। আজকাল ‘বিবাহ’ কথা চলিয়া গিয়াছে, তাই সেই কথা ছিল। এ বিবাহ হিন্দুর বিবাহ নহে।