পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮০
বিদ্যাসাগর।

বিধবা-বিবাহের ইহাই অকাট্য প্রমাণ ভাবিয়া, তিনি তখন লিখিতে বসিয়াছিলেন। সারা রাত্রি লিখিয়াছিলেন। তিনি যাহা লিথিয়াছিলেন, তা পরে মুদ্রিত করিয়া বিতরণ করেন।[১]

 সহরে আগুন জ্বলিয়া উঠিল। চারিদিকেই বাদ-প্রতিবাদের ধুম লাগিয়া গেল। বস্তুতঃ বিদ্যাসাগর মহাশয় গুরুতর পরিশ্রম সহকারে নানা ধর্মশাস্ত্রের আলোচনা করিয়াছিলেন। এক একটি শ্লোকের অর্থ-নির্ণয় করিতে কখন কখন সারা রাত্রি কাটিয়া যাইত। ১২৬০ সালের ১৩ই মাঘ বা ১৮৫৪ খৃষ্টাব্দের ২৮শে জানুয়ারী বিদ্যাসাগর মহাশয় ‘বিধবা-বিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কি না’ নামক ২২ পৃষ্ঠায় একখানি পুস্তিকা লিখিয়া মুদ্রিত ও প্রকাশিত করেন।

 “বিধবা বিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কি না’ পুস্তিকায় বিদ্যাসাগর মহাশয় লিপিচাতুর্য্য়ের প্রকৃষ্ট পরিচয় দিয়াছেন। এক সপ্তাহ কালের মধ্যে এই পুস্তিকার প্রথম সংস্করণ নিঃশেষিত হইয়া যায়।

 অতঃপর যে আলোচনা হইয়াছিল, ৺আনন্দকৃষ্ণ বাবু তৎসম্বন্ধে এইরূপ বলেন,—“বিধবা বিবাহ হওয়া উচিত কি না, এই সম্বন্ধে পুস্তিকা মুদ্রিত করিয়া, বিদ্যাসাগর আমাদের বাড়ীতে আসেন। তাঁহার পুস্তিকার সুন্দর লিপিচতুরতা ও তর্ক-প্রখরতা দেখিয়া আমরা বিমোহিত হইয়াছিলাম। আমরা বললাম-এখন তুমি পুস্তিকা প্রচার করিয়া তোমার প্রস্তাব কার্য্য়ে পরিণত করিবার চেষ্টা কর।’ বিদ্যাসাগর বলিলেন,—“যখন এ কার্যে প্রবৃত্ত হই-


  1. তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তৎকালীন সম্পাদক বাবু অক্ষয়কুমার দত্ত, ঐ পত্রিকায় উহার আদ্যন্ত মুদ্রিত করেন।