পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবা-বিবাহ।
২৮১

য়াছি, তখন ইহার জন্য প্রাণান্ত পণ জানিও। ইহার জন্য যথাসর্ব্বস্ব দিব। তবে তোমার মাতামহ যদি সহায় হন, তবে এ কার্য্য অপেক্ষাকৃত অল্প সময়ে ও সহজে সিদ্ধ হইবে। সমাজ ও রাজদরবারে তাহার যেরূপ সম্মান, তিনি সহায় হইলে, সমাজে সহজে আমার প্রস্তাব গ্রাহ্য় হইবে।[১] আমি বলিলাম, ‘দাদা মহাশয়ের সম্মুখীন হইয়া, এ কথা বলিতে সাহস হয় না। তিনি আমাদিগকে যথেষ্ট ভালবাসেন সত্য; তাঁহার নিকট এরূপ সামাজিক কথার উত্থাপন করাকে ধৃষ্টতা মনে করি। তুমি স্বয়ং একখানি পত্র লিখিয়া একখণ্ড পুস্তিকা তাঁহার নিকট প্রেরণ কর।’ বিদ্যাসাগর আমাদের প্রস্তাবে সম্মত হইয়া, পত্রসহ একখণ্ড পুস্তিকা মাতামহ মহাশয়ের নিকট প্রেরণ করেন। মাতামহ মহাশয় তাঁহার পুস্তিকা পড়িয়া পরম পরিতোষ লাভ করিয়াছিলেন। তিনি বিদ্যাসাগর মহাশকে ডাকাইয়া বলেন, ‘দেখ তুমি যে প্রণালীতে পুস্তিকা লিখিয়াছ, তাহা অতি মনোহর। তবে আমি বিষয়ী লোক, এ সম্বন্ধে কোনরূপ বিচার করা আমার সাধ্যাতীত এবং অসঙ্গত। এক দিন পণ্ডিতমণ্ডলীকে আহ্বান করিয়া এ সম্বন্ধে বিচার করাইবার ইচ্ছা করি। তুমি যদি সম্মত হও, তাহা হইলে দিন ধার্য্য় করিয়া পণ্ডিতমণ্ডলীকে আহ্বান করি। বিদ্যাসাগর সম্মত হইলেন। নির্দ্ধারিত দিনে

  1. বাস্তবিকই সমাজে—রাজদরবারে তখন রাযা রাধাকান্তদেব বাহাদুরের যেরূপ সম্মান ছিল, সেরূপ আর অল্প লোকের ছিল। তাঁহার পিতাসহ রাজা নবকৃষ্ণ গোষ্টিপতি হইয়া সমাজে যথেষ্ট সম্মানিত হইয়াছিলেন। এইজন্য সমাজে রাজা রাধাকান্ত দেবেরও যথেষ্ট সম্মান ছিল। তিনি নিজ বুদ্ধিবলে রাজদরবাৱে সম্মান পাইতেন।