পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮২
বিদ্যাসাগর।

অনেক পণ্ডিত ও বিদ্যাসাগর আমাদের বাটীতে উপস্থিত হইয়ছিলেন। সে দিন কোন মীমাংসা হয় নাই বটে; তবে, বিদ্যাসাগরের তর্প্রকণালীতে মাতামহ মহাশয় পরিতুষ্ট হইয়া, ভঁহাকে একখানি সাল উপহার দিয়াছিলেন। [১] বিদ্যাসাগরকে পুরস্কৃত হইতে দেখিয়া, তৎকালিক সমাজপতিরা সিদ্ধান্ত করিলেন, রাজা রাধাকান্তদেব বিধবাবিবাহ-প্রচলনের পক্ষপাতী। একদিন বড়বাজারের গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের প্রধান ব্যক্তিপ্রমুখ সমাজপতিরা মাতামহ মহাশয়ের নিকট আসিয়া বলিলেন,— 'আপনি কি সর্বনাশ করিলেন! আপনি কি হিন্দু-সমাজে বিধবা-বিবাহরূপ পাপপ্রথার প্রচলন করিতে চাহেন? বিদ্যাসাগরকে পুরস্কৃত করলেন কেন?’ ইহাতে মাতামহ মহাশয় উত্তর দিলেন,—'আমি বিধবা-বিবাহ-প্রচলনের পক্ষপাতী নহি। আমার তাহাতে অধিকার কি? আমি বিষয়ী লোক, শাস্ত্রবিচারের বা কি জানি। তবে বিদ্যাসাগরের তর্ক-প্রণালীতে তুষ্ট হইয়া, তাঁহাকে সাল পুরস্কার দিয়াছিলাম। ভাল, এতৎসম্মন্ধে পতিমণ্ডলীর সভা করিয়া, আর এক দিন বিচার করাইলেই হইবে।’ অতঃপর আমাদের বাড়ীতে আর এক দিন পণ্ডিতমণ্ডলীর সভা হইয়াছিল। ঐ দিন নবদ্বীপের প্রধান স্মার্ত ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন উপস্থিত ছিলেন। ও দিনেও বিচারে কিছুই মীমাংসা হয় নাই। বিচারকালে কেবল একটা গণ্ডগোল হইয়াছিল মাত্র। এ দিন মাতামহ মহাশয়, ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন মহাশয়কে সাল পুরস্কার দিয়াছিলেন। অতঃপর বিদ্যাসাগর, বুবিয়াছিলেন, মাতামহ মহা-

  1. বার্দ্ধক্যে স্মৃতিহ্রাস জন্য এই সাল উপহারের কথা আনন্দ বাবু দৃঢ় করিয়া বলেন নাই।