পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮৬
বিদ্যাসাগর।

বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বিধবা-বিবাহ বিবরিণী পুস্তিকা প্রচারিত হইবার পর, তৎপ্রতিবাদে যে সব পুস্তক প্রচারিত হইয়াছিল, ভাহার অধিকাংশেই গভীর অকাট্য যুক্তিপূর্ণ শান্ত-বাক্যের সমাবেশ হইয়াছিল। তবে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পুস্তিকা যেরূপ সরল প্রাঞ্জল ভাষায় লিখিত হইয়াছিল এবং তাহার যুক্তিখ্যাপন যেরূপ সহজ প্রণালীতে সমাবেশিত হইয়াছিল, এ সব পুস্তকে সেরূপ হয় নাই। যথার্থ শাস্ত্রদর্শী শাস্ত্রশাসিত ব্যক্তিদিগের নিকট এ সব পুস্তকের আদর হইয়াছিল। তবে বিধবা-বিবাহের পক্ষপাতী তৎকালিক ইংরেজি-শিক্ষিত লোকেরা এই সব পুস্তক উপেক্ষা করিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জয়ঘোষণা করিয়াছিলেন। সেই জয়ঘোষণা রাজপুরুষদিগের কর্ণপটহে প্রতিধ্বনিত হইয়াছিল। রাজপুরুষদের সঙ্গে তাৎকালিক ইংরেজীশিক্ষিত সম্প্রদায়েরই ঘনিষ্টতা ছিল কি না।

 এই সময়ে সমাজে তিন সম্প্রদায়ের সংঘর্ষণ চলিয়াছিল। প্রথম সম্প্রদায়—শাস্ত্রানুযায়ী ব্রাহ্মণপরিচালিত হিন্দু, ইঁহারা বিধবাবিবাহের ঘোর প্রতিবাদী ছিলেন। দ্বিতীয় সম্প্রদায়,—ইংরেজি শিক্ষিত প্রৌঢ় হিন্দু-সন্তান। ইঁহারা বিধবা-বিবাহের পক্ষপাতী ছিলেন; কিন্তু প্রকাশ্যে পক্ষপাতিতা প্রদর্শন করিতে পারেন নাই। তৃতীয় সম্প্রদায়,—ইংরেজি-শিক্ষিত ইংরেজি সভ্যতানুপ্রাণিত হিন্দু-সন্তান। ইঁহাৱা বিধবা-বিবাহের প্রগাঢ় পক্ষপাতী। ইঁহাদের দুন্দুভিনাদে বিদ্যাসাগরের জয়বার্তা বিষোষিত হইয়াছিল। এখনও এইরূপ সম্প্রদায়ের সঘর্ষণ চলিতেছে।

 তবে এখনকাম ইংরেজি-শিক্ষিত ব্যক্তিদিগের মধ্যে অনেককে শাস্ত্র-পথে চলিতে দেখা যায়। এরূপ মতিগতি