পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৫৬
বিদ্যাসাগর।

 সেই সময়ে বিধবা-বিবাহ-সম্বন্ধে তুমুল আন্দোলন চলিয়াছিল। সেই আন্দোলন সতত প্রবল রাখিবার জন্য নানা দিকে নানা উপায় উদ্ভাবিত হইয়াছিল। সেই উদ্দেশ্যে হাইকোর্টের ভূতপূর্ব্ব জজ মাননীয় শ্রীযুক্ত রমেশচন্দ্র মিত্রের জ্যেষ্ঠ সহোদর উমেশচন্দ্র মিত্র, “বিধবা-বিবাহ নাটক” রচনা করেন। সেই সময়ে (অর্থাৎ ১৮৫০ খৃষ্টাব্দের প্রারম্ভে) উহার অভিনয়। কেশবচন্দ্র সেন সেই অভিনয়ে “ষ্টেজ ম্যানেজার” এবং বাবু, নরেন্দ্রনাথ সেন, বাবু প্রতাপচন্দ্র মজুমদার, কৃষ্ণবিহারী সেন প্রভৃতি অভিনেতা ছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের থিয়েটার দেখিবার প্রবৃত্তি ছিল না। একবার একান্ত অনুরোধ এড়াইতে না পারিয়া, তিনি বেলগাছিয়া পাইকপাড়ার রাজ-বংশ কর্ত্তৃক অনুষ্ঠিত নাট্যাভিনয় দেখিতে গিয়ছিলেন। সুপ্রসিদ্ধ নট-কবি ৺গিরিশচন্দ্র ঘোষ, স্বপ্রণীত “সীতার বনবাস” বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নামে উৎসর্গ করিয়া তাঁহার অভিনয় দেখাইবার জন্য বিদ্যাসাগর মহাশয়কে অনুরোধ করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়, সে অনুরোধ রক্ষা করিতে পারেন নাই, কিন্তু তিনি বিধবা-বিবাহের অভিনয় একাধিক বার দেখিয়াছিলেন এবং সে সম্বন্ধে উৎসাহ দিতেন। অভিনয় দেখিতে দেখিতে, চক্ষের জলে তাঁহার বক্ষঃস্থল ভাসিয়া যাইত।[১] বিধবা-বিবাহ-প্রচলনের জন্য তিনি প্রাণপণে যত্ন করিতেন।

  1. The pioneer father of the widow marrige movement Pandit Iswar Chandra Vidyasagar came more than once and tender-herated as he is, was moved to floods of tears,— Life and Teachings of Keshub Chandra Sen by P.C Mozumder.