পাতা:বিপ্রদাস - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাস-খানেক তাকে কলকাতায় অত্যন্ত নিকটে পেয়ে নিশ্চয় ঘুঝেছি যে, রূপে-গুণে তেমন মেয়ে সংসারে দুর্লভ। বাইরে থেকে তাদের আচার-ব্যবহার যেমনই দেখাক, মা তাকে যদি দুটো দিনও কাছে কাছে দেখতে পান ত মেচ্ছ মেয়েদের সম্বন্ধে উটার ধারণা বদলে যাবে । কখনো তাকে অশ্রদ্ধা করতে পারবেন না । দ্বিজদাস বলিল, কিন্তু এই দুটো দিনই যে মাকে দেখানো শক্ত বৌদি । তিনি দেখতেই চাইবেন না। ইহাও সত্য । সতী কহিল, কিন্তু তার রূপটাও ত চোখে পড়বে ? চোখ মুজে ত ম' এটা অস্বীকার করতে পারবেন না ! সেও তা একটা পরিচয় । দ্বিজদাস চুপ করিয়া রহিল। সতী কহিল, আমার নিশ্চয় বিশ্বাস পন্দনাকে পৃথিবীতে কেউ অবহেলা করতে পারে না । মাও না । দ্বিজদাস বিস্ময়াপন্ন হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, বন্দন! নামটা শুনেচি মনে হয় বৌদি। কোথায় যেন দেখোঁচি, আচ্ছা দাড়াও, খবপ্নের কাগজে কি -একটা ছবিও যেনে কথাটা শেষ হইল না, ঝি সশব্দে ঘৰ্ব্বে ঢুকিয়া বলিল, ৰৌমা, তুমি এখানে ? তোমার কো-এ কি কাকা তার মেয়ে নিয়ে বোম্বাই থেকে এসে উপস্থিত হয়েছেন । বাইরে কেউ নেই, বড়ম্বাবুও না। সরকারমশাই তাদের নীচের ঘরে বসিয়েছেন । ঘটনাটা অভাবনীয়। আঁ্যা-বলিস কি রে ? বলিতে বলিতে সতী ঝড়ের বেগে ঘন্ধ হইতে বাহির হইয়া গেল। পিছনে গেল। দ্বিজদাস । 8 নিখুঁত সাহেবী-পরিচ্ছদে ভূষিত একজন প্রৌঢ় ভদ্রলোক চেয়াকে বসিয়াছিলেন, এবং একটি কুড়ি-একুশ বছরের মেয়ে তাহারই পাশে দাড়াইয়া দেয়ালে টাঙানো মস্ত একখানি জগদ্ধাত্রী দেবীর ছবি অত্যন্ত মনোযোগের সহিত নিরীক্ষণ করিতেছিল । তাহারও পরণে যাহা ছিল তাহা নিছক মেম-সাহেবের মত না হোক, বাঙলার মেয়ে বলিয়াও হঠাৎ মনে হয় না। বিশেষত: গায়ের রঙটা যেন সাদার ধার ঘোষিয়া আছে—এমনি ফর্স, । দেহের গঠন ও মুখের শ্ৰী অনিন্দ্যসুন্দর । দেবরের কাছে সতী এইমাত্ৰ যে গৰ্ব্ব করিয়া বলিতেছিল তার রূপটা ত শাশুড়ীর চোখে পড়িবে।-বস্তুতঃ এ কথা সত্য । ভগিনীর হইয়া এ রূপ লইয়া অহঙ্কার করা চলে । ঘরে ঢুকিয়া সতী গড় হইয়া প্ৰণাম করিল, বলিল, সেজকাকা, মেয়ের বাড়িতে এতকাল পরে পায়ের ধুলো পড়ল। *می نم è