পাতা:বিপ্রদাস - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এসেছিলুম বলা হ’লে না। ভাবলুম, ঘুমের ঘোরে বাস্ত্ৰ কেঁদোচে তাতে বিপ্রদাসের কি ? অন্য কথা মনে এলো, বললুম, শ্ৰাদ্ধের পর কোথায় থাকবেন দাদা ? কলকাতায় ? বললেন, না রে, যাব তীর্থভ্ৰমণে । ফিরবেন। কবে ? দাদা আবার একটু হেসে বললেন, ফিরবো না । স্তব্ধ হয়ে তঁর মুখের পানে চেয়ে দাড়িয়ে রইলুম। সন্দেহ রইলো না যে এ সঙ্কল্প টািলবে না। দাদা সংসার ত্যাগ করবেন । কিন্তু অনুনয়-বিনয় কঁাদা-কাটা কার কাছে ? এই নিষ্ঠুর সন্ন্যাসীর কাছে ? তার চেয়ে অপমান আছে ? কিন্তু বাস্ত্ৰ ? দাদা বললেন, হিমালয়ের কাছে একটা আশ্রমের খোজ পেয়েছি । তারা ছোট ছেলেদের ভার নেয় । শিক্ষা দেয়। তারাই । তাদের হাতে তুলে দেবেন। ওকে ? আর আমি করলুম মানুষ ? তার পর দুই হাতে কান চেপে পালিয়ে এলুম ঘর থেকে। তিনি কি জবাব দিলেন শুনিনি । বাসুর পাশে বসে সমস্ত রাত ভেবেচি। কোথায় যে এর কুল কিছুতে খুঁজে পাইনি। মনে পড়ল আপনাকে । বলে গিয়েছিলেন, বন্ধুর যখন হবে সত্যিকারের প্ৰয়োজন তখন ভগবান আপনি পৌঁচে দেবেন। তাকে দোর-গোড়ায় । বলেছিলেন এ-কথা বিশ্বাস করতে। কে বন্ধু, কবে সে আসবে জানিনে, তবু বিশ্বাস করে আছি আমার এই একান্ত প্ৰয়োজনে একদিন অসেবেই । चिधकांग পড়া শেষ হইলে দেখা গেল সাহেবের চোখ দিয়া জল পড়িতেছে। রুমাল বাহির করিয়া মুছিয়া বলিলেন, আজই যাও মা, আমি বাধা দেব না। দরওয়ান আর তোমার বুড়ো হিমুণ্ড সঙ্গে যাক । বন্দনা হেঁট হইয়া তার পায়ের ধূলা লইল, বলিল, যাবার উদ্যোগ করিগে বাবা, আমি উঠি । S v