পাতা:বিপ্রদাস - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সত্যবাদী তিনি, মিছে কথায় ভুলিয়ে চলে যাননি। ধেখানে আছে মানুষের চরম শ্ৰেয়, সেই তীর্থেই তিনি যাত্রা করেচেন। বিপ্ৰশ্বাস কহিলেন, হাঁ। তোমার মনকে বুঝিয়ে বোলো যা সবচেয়ে সুন্দর সবচেয়ে সত্য, সবচেয়ে মধুর, বড়দা সেই পথের সন্ধানে বার হয়েছেন । তঁকে ৰাধা দিতে নেই, তাকে ভ্ৰান্ত বলতে নেই, তার তরে শোক করা অপরাধ । বন্দনার চােখে আবার জল আসিয়া পড়িল, তাড়াতাড়ি মুছিয়া ফেলিয়া বলিল, তাই হবে, তাই হবে। এ-জীবনে আর যদি কখনো দেখা না পাই, তবু বলবো তিনি ভ্ৰান্ত ন’ন, তার তরে শোক করা অপরাধ । পর্দার ফ্যাক দিয়া মুখ বাড়াইয়া বিরাজ দত্ত বলিলেন, দিদি একটা জরুরি কথা আছে, একবার আসতে হবে যে । যাই বিরাজবাৰু। বড়দা, আসি এখন, বলিয়া বন্দনা ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল। সতীর শ্রাদ্ধের কাজ ঘটা করিয়া শেষ হইল। ভিক্ষুক কঙালী সতীসাধ্বীর জয়গান করিয়া গৃহে ফিরিল, সকলেই বলিল, মুখুয্যে-বাড়ীর কাঙ্গ এমনি করেহ হয়, এর ছোট-বড় নেই। * - সকালে স্নান সারিয়া বন্দনা প্ৰণাম করিতে বিপ্রদাসের ঘরে ঢুকিয়া বিশ্বয়ে থমকি দাড়াইল—তাহার পাশে বসিয়া দয়াময়ী। ভোরের ট্রেনে বাড়ী "ঋষ্টিয়াছেন, এখনো কেহ জানে না। মায়ের মূৰ্ত্তি দেখিয়া বন্দনার বুকে আঘাত লাগিল। সোনার বর্ণ কালি হইয়াছে, মাথার ছোট ছোট চুলগুলি রুক্ষ, ধূলিমাখা, চোখ বসিয়াছে, কপাল রেখা পড়িয়াছে- দুঃখ শোকের এমন ব্যথার ছবি বন্দনা কখনো দেখে নাই। তাহার মনে পড়িল সেদিনের সেই ঐশ্বৰ্য্যবর্তী সর্বময়ী কত্রী বিপ্ৰদাসের মাকে । ক’টা দিনই বা ! অ্যাজ সমস্ত মহিমা যেন তঁহার পথের ধূলায়। কাছে গিয়া প্ৰণাম করিয়৷ বলিল, কখন এলেন মা, আমি জানতে * 5 | দয়াময়ী তাহার চিবুক স্পর্শ করিয়া চুম্বন করিলেন, বলিলেন, আমার আসার খবর কিসের জন্যে বন্দনা ? তখন আসতো।” বিপ্রদাসের মা, তাই দেশের ছেলেবুড়ো সবাই টের পেতো। বিপিন, কাজ ত চুকে গেছে বাবা, চলনা মায়ে-পােয়ে আজই বেরিয়ে পড়ি। $ b”ኳም