পাতা:বিপ্রদাস - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহার পরিবর্তন চলিবে না। ঘর হইতে যখন বাহির হইল। এই কথাই সৰ্ব্বাগ্ৰে মনে হুইল, ভবিষ্ণুতে যতদূর দৃষ্টি যায় কোনদিন কোন ছলেই। এখানে ফিরিয়া আসার সম্ভাবনা নাট, কিন্তু তাহার অনেক সুখের স্বপ্ন দিয়া এই ঘরখানি যে পূর্ণ হেয়া বুহিল ১ তাহা কোনকালে ভুলিতে পাৰিবে না । সোজা পথ ছাড়িয়া দ্বিজদাসের পাশের বারান্দা ঘুরিয়া নামিবার সময়ে সে ঘরের মধ্যে একবার চোখ ফিরাইল। কিন্তু থে জানালাটা খোলা ছিল তাহা দিয়া দ্বিজদাসকে দেখা গেল না। মোটরের কাছে দাড়াইয়া দত্তমশাই, রায়সাহেব তঁহাকে ডাকিয়া ভূত্যদের দেবার জন্য অনেকগুলো টাকা হাতে দিলেন এবং হঠাৎ যাবার জন্য অনেক দুঃখ প্ৰকাশ করিয়া দ্বিজদাসের খবরটা তাহাকে অতি শীঘ্ৰ জানাইবার অনুরোধ করিলেন। গাড়ীতে উঠিবার পূর্বে বন্দনা অন্নদাকে একপাশে ডাকিয়া লইয়া বলিল, দ্বিজবাবুৱা তুমি দিদি,-ৰ্তাকে মানুষ করেচি--এই আংটিটি তোমার বৌমাকে দিও অনুদিদি, সে যেন পরে, এই বলিয়া হাতের আঙটি খুলিয়া তাহার হাতে দিয়াই বাবার পাশে গিয়া বসিল । মোটর ছাড়িয়া দিল। এখানে-ওখানে দাড়াইয়া কয়েকজন ভৃত্য ও দত্তমখাই नभश कब्रेिन । বন্দনা নিজের অজ্ঞাতসারেই উপরে চোখ তুলিল, কিন্তু আজ সেখানে আর একদিনের মত সকলের অগোচরে দাড়াহয়া নিঃশব্দে সংকেত বিধায় দিতে দ্বিজদাস দাড়াইয়া নাই । আজি সে পীড়িত,-আজি দে নিদ্রায় অচেতন । দয়াময়ীর আচরণে বন্দনার প্রতি যে প্রচ্ছন্ন লাঞ্ছনা ও অব্যক্ত গঞ্জনা ছিল সতীকে তাহা গভীরভাবে বিধিয়াছিল। কিন্তু শাশুড়ীকে কিছু বলা সহজ নয়, তাই মো একখানি চিঠি লিখিয়া বােনের হাতে দিবার জন্য স্বামীকে ঘরে ডাকিয়া পাঠাইল । দুপুরের ট্রেনে বিপ্রদাস কলকাতায় ফিরিবে। এখন সময় দয়াময়ী আসিয়া প্রবেশ করিলেন। এরূপ তিনি কখন করেন না-ছেলে এবং বৌ উভয়েই বিস্মিত হইল-“সতী মাথায় আঁচল টানিয়া দিয়া বাহির হইয়া যাইতেছিল, শাশুড়ী নিষেধ করিয়া কহিলেন, না। বেীমা, যে ও না। তোমার অসাক্ষাতে তোমার বোনের নিন্দে করবো না একটু দাড়াও ! বিপিন, জানিল তুই, কেন এত ব্যস্ত হয়ে আমি বাড়ী চলে এলুম, { বিপ্ৰদাস বলিল, ঠিক জানিনে মা, কিন্তু কোথায় কি-একটা গোিলযোগ ঘটেচে এইটুকুই আন্দাজ করেচি। r