পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

(৬) যাহাদের মাতৃভাষা স্কুলের প্রচলিত ভাষা হইতে পৃথক, সংখ্যায়, যথোপযুক্ত হইলে তাহাদের জন্য তাহাদের মাতৃভাষাতেই শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করিতে হইবে। বলা বাহুল্য ভারতীয়মাত্রকেই একটি অখণ্ড জাতি হিসাবে গণ্য করিবার যে উদার নীতি এই প্রস্তাবে স্বীকৃত হইয়াছে, উহা সম্পূর্ণরূপে কংগ্রেসের মূল নীতি ও আদর্শের পরিপোষক ও গণতন্ত্রের অনুকূল। সুভাষচন্দ্রের সভাপতিত্বকালে পার্লামেণ্টারী কার্য্যক্ষেত্রে কংগ্রেসী মন্ত্রিবর্ণ অপরিসীম দক্ষতার পরিচয় প্রদান করেন। জাগ্রত জনমতের নিকট দাম্ভিক ক্ষমতাপ্রিয় গভর্নরগণ অনেকক্ষেত্রে নীতি স্বীকার করিতে বাধ্য হয়। ভারতের আটটি প্রদেশে কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা শাসনভার গ্রহণ করেন। আসামে কংগ্রেস কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। সিন্ধু, পাঞ্জাব, বাঙলাদেশেও কংগ্রেস যথেষ্ট শক্তিশালী হয়। পার্লামেণ্টারী কার্য্যকলাপে কংগ্রেসের মর্য্যাদা, শক্তি ও কর্মতৎপরতা অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।

 কিন্তু সুভাষচন্দ্রের এই কার্য্যকলাপ দেশের মধ্যে নবজীবনের সঞ্চার করিলেও কংগ্রেস নেতৃত্বের একটি অংশের নিকট উহা মোটেই প্রীতিকর হইতেছিল না। কংগ্রেসের দক্ষিণপন্থী নেতৃবৃন্দ কংগ্রেসের অভ্যন্তরে বামপন্থী বিপ্লবী-শ্রেণীর এইরূপ সুসংহত অভিযান মোটেই সুনজরে দেখিতে পারিতেছিলেন না। কংগ্রেসের ঊর্দ্ধতন কর্ত্তৃপক্ষের সুভাষ-বিরোধিতা নির্লজ্জরূপে আত্মপ্রকাশ করিল ত্রিপুরী কংগ্রেসের রাষ্ট্রপতি নির্ব্বাচনের সময়। ইতিপূর্বে নরীম্যান ও খারে কংগ্রেস উচ্চমণ্ডলের রোষদৃষ্টিতে পতিত হইয়াছিলেন, এইবার সুভাষচন্দ্রের উপরেই খড়্গ পড়িল!