পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বাইশ

 ৩০শে জানুয়ারী কলিকাতার নাগরিকবৃন্দের পক্ষ হইতে শ্রদ্ধানন্দ পার্কে এক মহতী জনসভায় নবনির্ব্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে যে অভিনন্দন প্রদান করা হয় তাহার উত্তরে সুভাষচন্দ্র বলেন, “আমার জয়লাভে নীতি ও আদর্শের জয় হইয়াছে। ইহার মধ্যে ব্যক্তিত্বের কথা আসে না।” দক্ষিণপন্থীদের পরাজয়ের ফলে কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে যাহাতে কোন প্রকার দলাদলির সৃষ্টি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখিয়াই সুভাষচন্দ্র ঘোষণা করিলেন, ইহা আনন্দ প্রকাশের সময় নহে—যে গুরু কর্ত্তব্যের বোঝা আমাদের উপরে ন্যস্ত হইয়াছে আশা করি আমার সমর্থকগণ সে সম্বন্ধে অবহিত হইবেন। ঐ দিন নির্ব্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে তিনি যে বিবৃতি প্রচার করেন তাহাতে তিনি বলেন, “ভারতের স্বাধীনতা লাভের শত্রুরা হয়ত এই ভাবিয়া উৎফুল্ল হইয়াছেন যে, এই নির্ব্বাচনদ্বন্দ্বের ফলে কংগ্রেসের মধ্যে দলাদলি সূচিত হইতেছে। কিন্তু আমি সুস্পষ্ঠভাবে সকলকে জানাইয়া দিতেছি যে, কংগ্রেস পূর্ব্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ রহিয়াছে— কোন দলাদলি ঘটিতে পারে নাই। কোন কোন বিষয়ে কংগ্রেসকর্ম্মীদের মধ্যে মতভেদ থাকিতে পারে, কিন্তু সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সকলেই একমত। দেশের সাম্রাজ্যবাদ- -বিরোধী দল ও প্রতিষ্ঠান সমূহের ঐক্য ও সংহতি বর্ত্তমানে পূর্ব্বাপেক্ষা অধিকতর প্রয়োজনীয়। যাহাতে সেই ঐক্য ও সংহতি পরোক্ষভাবেও ক্ষুন্ন হইতে পারে, এমন কোন কাজ করা বা কথা বলা আমাদের পক্ষে উচিত হইবে না।” সুভাষচন্দ্র দেশবাসীকে তাঁহার জয়লাভে হর্ষ প্রকাশে বিরত থাকিতে পরামর্শ দিলেও সমগ্র ভারতবর্ষে এখন ইহাই প্রধান আলোচ্য বিষয় হইয়া দাঁড়াইল। দলাদলিপ্রিয় কোন কোন সংবাদপত্র দক্ষিণপন্থীদের এই পরাজয়ে