পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৫৩

ইহা সত্য যে, কোন প্রতিপত্তিশালী নেতা সর্ত্তাধীনে যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করিবার জন্য প্রকাশ্যে এবং ঘরোয়াভাবে মত প্রকাশ করিতেছেন এবং এ পর্য্যন্ত দক্ষিণপন্থী কোন নেতাই এইরূপ প্রচারকার্য্যের নিন্দা করেন নাই। গান্ধীজী ও গান্ধীবাদের প্রতি তাঁহার শ্রদ্ধা ও সমর্থন জ্ঞাপন করিয়া তিনি উক্ত বিবৃতিতে লিখেন, “বর্ত্তমানে এরূপ ধারণার সৃষ্টি চলিতেছে যে, গান্ধীবাদের আদর্শ ও আঙ্গিকের প্রতি আমাদের বিশ্বাস নাই। কংগ্রেসী রাজনীতির উপর যে গান্ধীবাদ আরোপ করা হয় তাহা কি? সত্য ও অহিংসাই ইহার মূল নীতি—অহিংস অসহযোগিতাই ইহার কর্মপন্থা। আমাদের মূলনীতি ও পথের বিষয়ে কংগ্রেস কর্ম্মীদের মধ্যে কোন মতানৈক্য থাকিতে পারে না। যদি গান্ধীমতবাদ বলিতে কেহ মহাত্মাজীর ব্যক্তিগত আচরণ, তাঁহার আহার-পদ্ধতি, তাঁহার জীবনযাত্রাপ্রণালী, তাঁহার পোষক-পরিচ্ছদ প্রভৃতিকেও অন্তর্ভুক্ত করিতে চান, তবে মহাত্মাজীর তথাকথিত গোঁড়া ভক্তদের মধ্যেও কতজন তাহা বিশ্বাস করেন তৎসম্পর্কে আমার আশঙ্কা হয়। আমি পুনরায় বলিতেছি যে, মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অর্থ ইহা নহে যে, অন্ধের মত তাঁহার ইচ্ছা ও চিন্তাধারার অনুসরণ করিতে হইবে। আমি যদি তাঁহাকে ঠিকভাবে বুঝিয়া থাকি, তাহা হইলে আমি ইহাও বলিতে পারি যে, কোন লোক যতক্ষণ পর্য্যন্ত মহাত্মাজীর সত্য ও অহিংসার মূলনীতির বিরোধিতা না করে, ততক্ষণ সে তাহার নিজস্ব বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কাজ করিবে ইহা মহাত্মাজীর অভিপ্রেত নয়। তাঁহার প্রতি আমার নিজের মনোভাব এই যে, স্বীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রাখিয়াও আমি তাঁহার বিশ্বাস অর্জ্জনের জন্য সচেষ্ট থাকিব।”