পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আট

 ১৯২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুভাষচন্দ্র কারামুক্ত হইলেন। এই সময় উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা হয়। সহস্র সহস্র নরনারী গৃহচ্যুত হয়। আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে এক রিলিফ কমিটি গঠিত হয়। কারা মুক্তির পরেই সুভাষচন্দ্র উত্তরবঙ্গের বন্যাবিধ্বস্ত অঞ্চলের নরনারীর দুর্দ্দশামমাচনকল্পে এই রিলিফের কার্য্যে আত্মনিয়োগ করেন। উত্তরবঙ্গের বন্যায় রিলিফ কমিটির সম্পাদকরূপে তিনি অসাধারণ কর্ম্মকুশলতার পরিচয় দেন। তদানীন্তন বাঙ্‌লার লাট লর্ড লিটন তাঁহার কর্ম্ম দক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করিয়া শান্তাহারে তাঁহাকে অভিনন্দন জানান।

 এদিকে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন ও সুভাষচন্দ্রের কারামুক্তির পূর্ব্বেই মহাত্মা গান্ধী গ্রেফতার হইয়া ছয় বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। জেলে যাইবার পূর্ব্বে মহাত্মাজী চৌরীচৌরাতে অনুষ্ঠিত হিংসাত্মক কার্য্যের জন্য আইন অমান্য ও সত্যাগ্রহ আন্দোলন বন্ধ করিয়া দেন। ১৯২২ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন গয়া কংগ্রেসের রাষ্ট্রপতি নির্ব্বাচিত হন। গয়া কংগ্রেস নানাদিক দিয়াই কংগ্রেসের ইতিহাসে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করিয়া আছে। গয়ার অধিবেশনে কাউন্সিল প্রবেশ ও বর্জ্জনের সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করে। দেশবন্ধু বিশ্বাস করিতেন, কাউন্সিল বর্জ্জন অপেক্ষা কাউন্সিলে প্রবেশের দ্বারাই জাতীয় আন্দোলন অধিকতর শক্তিশালী হইবে। দেশবন্ধুর পক্ষে ছিলেন যুক্তপ্রদেশের বিখ্যাত নেতা পণ্ডিত মতিলাল নেহ্‌রু। গয়া কংগ্রেসে যাঁহারা দেশবন্ধুর পক্ষ সমর্থন করেন তাঁহারা কংগ্রেসের অভ্যন্তরে ‘স্বরাজ্যদল’ নামে একটি দল গঠন করেন। কংগ্রেসের কর্মপন্থা সম্পর্কে মতভেদের ফলে কংগ্রেসের অভ্যন্তরে ইহাই প্রথম নূতন দল সৃষ্টি। গয়া কংগ্রেসে সুভাষচন্দ্র দেশবন্ধুর কাউন্সিল প্রবেশের প্রস্তাব সমর্থন করেন। সেই সময় হইতে দেশবন্ধুর সমস্ত