পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ صنا ৪র্থ। দেহধ্বংসের পর আত্মা থাকিলে, তাহার যে আবার জরামরণাদিজ দুঃখের সম্ভাবনা আছে, তাহার কিছুমাত্ৰ প্ৰমাণ নাই। অতএব যাহারা আত্মার পার্থক্য ও নিত্যত্ব মানেন, তঁাহারাও সাংখ্য মানিবেন না। এবং এ সকল মত যে, এ কালে গ্রাহা হইবে, এমত বিবেচনায় আমরা সাংখ্যদর্শন বুঝাইতে প্ৰবৃত্ত হই নাই। কিন্তু এক্ষণে যাহা অগ্ৰাহ, দুই সহস্ৰ বৎসর পূর্বে তাহা আশ্চৰ্য্য আবিক্রিয়া। সেই আশ্চৰ্য্য আবিস্ক্রিয়া কি, ইহাই বুঝান আমাদিগের অভিপ্ৰায়। প্ৰকৃতি-পুরুষের সংযোগের উচ্ছিত্তিই অপবর্গ বা মোক্ষ। তাহা কি প্রকারে প্রাপ্ত श्७ग्ना याग्न ? সাংখ্যকার বলেন, বিবেকের দ্বারা। কিন্তু কোন প্ৰকার বিবেকের দ্বারা মোক্ষ লাভ হয় ? প্ৰকৃতিবিষয়ে যে অবিবেক, সকল অবিবেক তাহার অন্তৰ্গত । অতএব প্ৰকৃতিপুরুষসম্বন্ধীয় জ্ঞানদ্বারাই মোক্ষ লাভ হয়। অতএব জ্ঞানেই মুক্তি। পাশ্চাত্য সভ্যতার মূল কথা, “জ্ঞানেই শক্তি" (Knowledge is Power.); হিন্দুসভ্যতার মূল কথা, “জ্ঞানেই মুক্তি।” দুই জাতি দুইটি পৃথক উদ্দেশ্যানুসন্ধানে এক পথেই যাত্ৰা করিলেন। পাশ্চাত্যেরা শক্তি পাইয়াছেন—আমরা কি মুক্তি পাইয়াছি ? বস্তুতঃ এক যাত্রার যে পৃথক ফল হইয়াছে, ७ोंश् (७ अ५० श् नले । ইউরোপীয়েরা শক্তি-অনুসারী, ইহাই তাহাদিগের উন্নতির মূল। আমরা শক্তির প্ৰতি যত্নহীন, ইহাই আমাদিগের অবনতির মূল। ইউরোপীয়দিগের উদ্দেশ্য ঐহিক ; তাহার। ইহকালে জয়ী । আমাদিগের উদেশ্য পারিত্রিক-তাই ইহকালে আমরা জয়ী হইলাম না। পরকালে হইব কি না, তদ্বিষয়ে মতভেদ আছে। কিন্তু জ্ঞানেই মুক্তি, এ কথা সত্য হইলেও ইহার দ্বারা ভারতবর্ষের পরম লাভ হইয়াছে বলিতে হইবে। প্ৰাচীন বৈদিক ধৰ্ম্ম ক্রিয়াত্মক ; প্ৰাচীন আৰ্য্যের প্রাকৃতিক শক্তির পূজা একমাত্র মঙ্গলোপায় বলিয়া জানিতেন। প্ৰাকৃতিক শক্তিসকল অতি প্ৰবল, স্থির, আশাসনীয়, কখন মহামঙ্গলকর, কখন মহৎ অমঙ্গলের কারণ দেখিয়া প্ৰথম জ্ঞানীরা তাহাদিগকে ইন্দ্ৰ, বরুণ, মরুৎ, অগ্নি প্ৰভৃতি দেবতা কল্পনা করিয়া ভঁাহাদিগের স্তুতি এবং উপাসনা করেন । ক্রমে তাহাদিগের গ্ৰীত্যৰ্থ যাগ যজ্ঞাদির বড় প্ৰবলত হইল। অবশেষে সেই সকল যাগ যজ্ঞাদিই মানুষ্যের প্রধান কম্বুর্ঘ্য এবং পারিত্রিক সুখের একমাত্র উপায় বলিয়া, লোকের একমাত্র অনুষ্ঠেয় হইয়া পড়িল। শাস্ত্ৰসকল কেবল তৎসমুদায়ের