পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:) úbr বিবিধ প্ৰবন্ধ এই কথা নারদ যেমন যুধিষ্ঠিরকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, আমরা তেমনি ভারতবর্ষীয় রাজপ্ৰতিনিধিকে জিজ্ঞাসা করি । অনেকের বোধ আছে, “ইরিগেশ্যন ডিপার্টমেণ্ট’টি ভারতবর্ষে একটি নূতন কাং দেখাইতেছে। তাহা নহে। নারদ বলিতেছেন-- “রাজ্যমধ্যে স্থানে স্থানে সলিলপূর্ণ বৃহৎ বৃহৎ তড়িাগ ও সরোবর সকল ত নিখাদ্য হইয়াছে ? কৃষিকাৰ্য্য তা বৃষ্টিনিরপেক্ষ হইয়া সম্পন্ন হইতেছে ?” এ কথা ইংরেজদিগের মনে থাকিলে উড়িষ্যাদিতে দুভিক্ষ ঘটিত না । নিম্নলিখিত বাক্যটির প্রতি ব্রিটিশ গবৰ্ণমেণ্ট মনোযোগ করিলে আমাদিগের বিবেচনায় ভাল হয় । “কৃষকদিগের গৃহে বীজ ও অন্নাদির ত অসদ্ভাব নাই ? আবশ্যক হইলে তা পাদিক বৃদ্ধিতে অনুগ্রহ স্বরূপ শতসংখ্যক ঋণ দান করিয়া থাকেন ?” এক্ষণে এই নিয়মের অভাবে এ দেশের কৃষকের মহাজনের নিকট বিক্রীত । মহাজনের নিকটেও সকলে সকল সময়ে পায় না-অনেকেই অন্নাভাবে শীর্ণ-বীজাভাধে ভরসাশূন্য। যে পায়, সেও দ্বিপাদ বৃদ্ধিতে নহিলে পায় না। অনেকে বলিবেন যে, যে অর্থশাস্ত্ৰ অনবগত, সেই রাজাকে মহাজানি করিতে পরামর্শ দিবে। --রাজার ব্যবসায়, সমাজের অনিষ্টকারক। অর্থশাস্ত্রাঘটিত যে আপত্তি, তাহা আমরা অবগত আছি এবং মহাভারতকার ও অবগত ছিলেন। এই জন্যই নারদের ঐ বাক্যমধ্যেই তিনটি গুরুতর নিয়ম সন্নিবিষ্ট আছে। প্রথম-"আবশ্যক হইলে” ঋণ দিতে বলিতেছেন-ইহার অর্থ যে, যাহাকে না দিলে চলে না, তাহাকেই দিবেন। অতএব যে মহাজনের নিকট ঋণ পাইতে পরিবে, তাহাকে ঋণ দেওয়া এই কথায় প্রতিষিদ্ধ হইল। সুতরাং রাজা ব্যবসায়ী হইলেন না। যাহাকে রাজা না দিলে সে দুৰ্দশাগ্ৰস্ত হইবে, তাহাকেই দিবেন। দ্বিতীয়তঃ “অনুগ্রহ স্বরূপ” দিবেনঅর্থাৎ ব্যবসায়ীর ন্যায় লাভাকাঙ্ক্ষায় দিবেন না। তবে পাদিক বৃদ্ধির কথা কেন ? এ নিয়ম না করিলে যে সে নিম্প্রয়োজনেও ঋণ লইবার সম্ভাবনা-বঞ্চক জাতি সর্বত্রই আছে । আর ঋণ দিলেই কতক আদায় হয়, কতক আদায় হয় না। যদি বৃদ্ধির নিয়ম না। থাকে, তবে রাজাকে ক্ষতিগ্ৰস্ত হইতে হয়। ক্ষতি স্বীকার করিয়া রাজকোষ হইতে ঋণ দিতে হইলে রাজ্য চলা ভার। তৃতীয়তঃ “শতসঙ্খ্যক” ঋণ দিবে-ইহার উদ্ধ দিবে না । অর্থাৎ প্ৰজার জীবননির্বাহার্থে যে পৰ্য্যন্ত প্ৰয়োজন, তাহাই রাজা ঋণস্বরূপ দিতে পারেন ৷ ততোধিক ঋণদান ব্যবসায়ীর কাজ। এই তিনটি নিয়মের দ্বারা