পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

δο ο বিবিধ প্ৰবন্ধ-দ্বিতীয় 丐t引 যে সমদৰ্শিতা, ইহাই সেই অহিংসা-ধৰ্ম্মের যথার্থ তাৎপৰ্য্য। সমদৰ্শী হইলে আর হিংসা | থাকে না। এই সমদৰ্শিতা থাকিলেই মনুষ্য, বিষ্ণুনাম জানুক না জানুক, যথাৰ্থ বৈষ্ণব হইল। যে খিষ্টিয়ান, কি মুসলমান মনুষ্যমাত্রকে আপনার মত দেখিতে শিখিয়াছে, সে যিশুরই পূজা করুক আর পীর প্যাগম্বরেরই পূজা করুক, সে-ই পরম বৈষ্ণব। আর তোমার কণ্ঠী কুঁড়োজালির নিরামিষের দিলে, যাহারা তাহা শিখে নাই, তাহারা কেহই বৈষ্ণব নহে । আমি। মাছ পাট খেয়ে কি তবে বৈষ্ণব হওয়া যায় ? বাবাজি। মূখ'। তোকে বুঝাইলাম কি ? আমি। তবে আমাকেও একখানা পাতা দিতে বলুন। তখন পাতা, এবং কিঞ্চিৎ অন্ন এবং মহাপ্ৰসাদ পাইয়া আমিও ভোজনে বসিলাম । পাকের কাৰ্য্যটা অতি পরিপাটিরূপ হইয়াছিল। ছাগমাংস ভোজনে আমার ক্ষুধা বৃদ্ধির লক্ষণ দেখিয়া বাবাজি বলিলেন, “বাপু হে! কল্পনা করিয়াছি, পরামর্শ দিয়া আগামী বৎসর কছিমদী সেখকে দিয়া দুর্গোৎসব করাইব ।” ऊाभिं । शष्ठ्ल कि ? বাবাজি । ছাগমাংস কিছু গুরুপাক। মুরগী বড় লঘুপাক, অতএব বৈষ্ণবের পক্ষে বিশেষ উপযোগী । আমি। মুসলমানের বাড়ী খাইতে আছে ? বাবাজি। এ কান দিয়ে শুনিস ও কান দিয়ে ভুলিস ? যখন সৰ্ব্বত্র সমান জ্ঞান, সকলকে আত্মবৎ জ্ঞানই বৈষ্ণবধৰ্ম্ম, তখন হিন্দু ও মুসলমান, এ ছোট জাতি, ও বড় জাতি, এরূপ ভেদ-জ্ঞান করিতে নাই। যে এরূপ ভেদ-জ্ঞান করে, সে বৈষ্ণব, নহে। আজ তোমাকে বৈষ্ণবধৰ্ম্ম কিছু বুঝাইলাম। আর একদিন তোমাকে ব্ৰহ্মোপাসনা এবং কৃষ্ণোপাসনা বুঝাইব । ধৰ্ম্মের প্রথম সোপান, বহু দেবের উপাসনা ; দ্বিতীয় সোপান, সকাম ঈশ্বরোপাসনা ; তৃতীয় সোপান, নিষ্কাম ঈশ্বরোপাসনা বা বৈষ্ণবধৰ্ম্ম অথবা জ্ঞানযুক্ত ব্ৰহ্মোপাসনা । ধৰ্ম্মের চরম কৃষ্ণোপাসনা ।