পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

აŠხz বিবিধ প্ৰবন্ধ-দ্বিতীয় ভাগ টাকা পাইব, ৩০ ০ শত বিঘা চাষ করিলে, ৩০ ০ টাকা পাইব । বঙ্গদেশে দিন দিন চাষের বুদ্ধিতে দেশের কৃষিজাত ধন বৃদ্ধি পাইতেছে। আর একটা কথা আছে। সকলে মহাদুঃখিত হইয়া বলিয়া থাকেন, এক্ষণে দিনপাত করা ভার—দ্রব্য সামগ্ৰী বড় দুৰ্ম্ম ল্য হইয়া উঠিতেছে। এই কথা নির্দেশ করিয়া অনেকেই প্ৰমাণ করিতে চাহেন যে, বৰ্ত্তমান সময় দেশের পক্ষে বড় দুঃসময়, ইংরাজের রাজ্য প্রজাপীড়ক রাজ্য, এবং কলিযুগ অত্যন্ত অধৰ্ম্মাক্রান্ত যুগ-দেশ উৎসন্ন গেল ! ইহা যে গুরুতর ভ্ৰম, তাহা সুশিক্ষিত সকলেই অবগত আছেন। বাস্তবিক, দ্রব্যের বর্তমান সাধারণ দৌৰ্ম্মল” দেশের অমঙ্গলের চিহ্ন নহে, বরং একটি মঙ্গলের চিহ্ন। সত্য বটে, যেখানে আগে আট আনায় এক মণ চাউল পাওয়া যাইত, সেখানে এখন আড়াই টাকা লাগে ; যেখানে টাকায় তিন সের ঘূত ছিল, সেখানে টাকায় তিন পোয় পাওয়া ভার। কিন্তু ইহাতে এমত বুঝায় না। যে, বস্তুতঃ চাউল বা ঘূত দুৰ্ম্মল্য হইয়াছে। টাকা সস্ত হইয়াছে, ইহাই বুঝায়। সে যাহাঁই হউক, এক টাকার ধান এখন যে দুই তিন টাকার ধান হইয়াছে, তাহাতে সন্দেহ নাই । ইহার ফল। এই যে, যে ভূমিতে কৃষক এক টাকা উৎপন্ন করিত, সে ভূমিতে দুই তিন টাকা উৎপন্ন হয়। যে ভূমিতে দশ টাকা হইত, তাহাতে ২০ কি ৩০ টাকা হয়। বঙ্গদেশের সর্বত্রই বা অধিকাংশ স্থানে এইরূপ হইয়াছে, সুতরাং এই এক কারণে বঙ্গদেশের কৃষিজাত বাৰ্ষিক আয়ের বৃদ্ধি হইয়াছে। P আবার পূর্বেই সপ্রমাণ করা গিয়াছে, কাৰ্ষিত ভূমিরও আধিক্য হইয়াছে। তবে দুই প্রকারে কৃষিজাত আয়ের বৃদ্ধি হইয়াছে ; প্রথম, কৰ্ষিত ভূমির আধিক্যে, দ্বিতীয়, ফসলের মূল্যবৃদ্ধিতে। যেখানে এক বিঘা। ভূমিতে তিন টাকার ফসল হইত, সেখানে সেই এক বিঘায় ছয় টাকা জন্মে, আবার আর এক বিঘা জঙ্গল পতিত আবাদ হইয়া, আর ছয় টাকা ; মোটে তিন টাকার স্থানে বার টাকা জন্মিতেছে। এইরূপে বঙ্গদেশের কৃষিজাত আয় যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় হইতে এ পর্য্যন্ত তিন চারিগুণ বৃদ্ধি হইয়াছে, ইহা বলিলে অত্যুক্তি হইবে না। এই বেশী টাকাটা কার ঘরে যায় ? কে লইতেছে ? এ ধান কৃষিজাত-কৃষকেরই প্ৰাপ্য-পাঠকেরা হঠাৎ মনে করিবেন, কৃষকেরাই পায়। বাস্তবিক তাহারা পায় না। কে পায়, আমরা দেখাইতেছি। h কিছু রাজভাণ্ডারে যায়। থুত সন ১৮৭০/৭১ সালের যে বিজ্ঞাপনী কলিকাতা রেবিনিউ বোর্ড হইতে প্রচার হইয়াছে, তাহাতে কাৰ্য্যাধ্যক্ষ সাহেব লিখেন, ১৭৯৩ সালে