পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদেশের কৃষক &o শ্ৰমোপজীবীর এই কারণে দুর্দশার আরম্ভ। কিন্তু একবার অবনতি আরম্ভ ইলেই, সেই অবনতিরই ফলে আরও অবনতি ঘটে। শ্ৰমোপজীবীদিগের যে পরিমাণে দুরবস্থা বৃদ্ধি হইতে লাগিল, সেই পরিমাণে তাহাদিগের সহিত সমাজের অন্য সম্প্রদায়ের তারতম্য অধিকতর হইতে লাগিল। প্ৰথম, ধনের তারতম্য-তৎফলে অধিকারের তারতম্য। শ্রমোপজীবীরা হীন হইল বলিয়া তাহদের উপর বুদ্ধাপজীবীদিগের প্রভুত্ব বাড়িতে লাগিল। অধিক প্রভৃত্বের ফল অধিক অত্যাচার। এই প্ৰভুত্বেই শূদ্রপীড়ক স্মৃতিশাস্ত্রের মূল। আমরা যে সকল কথা বলিলাম, তাহার তিনটি গুরুতর তাৎপৰ্য্য দেখা যায়। ১। শ্রমোপজীবীদিগের অবনতির যে সকল কারণ দেখাইলাম, তাহার ফল ত্ৰিবিধ । প্ৰথম ফল, শ্রমের বেতনের অল্পতা । ইহার নামান্তর দরিদ্রতা । দ্বিতীয় ফল, বেতনের অল্পতা হইলেই পরিশ্রমের আধিক্যের আবশ্যক হয় ; কেন না, যাহা কমিল, তাহ খাটিয়া পোষাইয়া লইতে হইবে। তাহাতে অবকাশের ধ্বংস । অবকাশের অভাবে বিদ্যালোচনার অভাব। অতএব দ্বিতীয় ফল মূর্থিতা। তৃতীয় ফল, বুদ্ধাপজীবীদিগের প্রভুত্ব এবং অত্যাচার বৃদ্ধি। ইহার নামান্তর नामाङ् । দারিদ্র্য, মুখতা, দাসত্ব। ২। ঐ সকল ফল একবার উৎপন্ন হইলে ভারতবর্ষের ন্যায় দেশে প্ৰাকৃতিক নিয়মগুণে স্থায়িত্ব লাভ করিতে উন্মুখ হয়। দেখােন গিয়াছে যে, ধনসঞ্চয়ই সভ্যতার আদিম কারণ। যদি বলি যে, ধনলিপিসা সভ্যতাবৃদ্ধির নিত্য কারণ, তাহা হইলে অত্যুক্তি হইবে না। সামাজিক উন্নতির মূলীভূত মনুষ্যহীদয়ের দুইটি বৃত্তি ; প্রথম জ্ঞানলিন্স, দ্বিতীয় ধনলিন্সা। প্রথমোক্তটি মহৎ এবং আদরণীয়, দ্বিতীয়টি স্বার্থসাধক এবং নীচ বলিয়া খ্যাত। কিন্তু "History of Rationalism in Europe'rt at: 31 লেকি সাহেব বলেন যে, দুইটি नृद्धिंद्र भ८१J ধনলিন্সাই মনুষ্যজাতির অধিকতর মঙ্গলকর হইয়াছে। বস্তুতঃ জ্ঞানলিন্স কাদাচিৎক, ধনলিন্স সর্বসাধারণ ; এ জন্য অপেক্ষাকৃত ফলোপধায়ক। দেশের উৎপন্ন ধনে জনসাধারণের গ্ৰাস আচ্ছাদনের কুলান হইতেছে বলিয়া সামাজিক ধনলিন্সা কমে না। সর্বদাই নৃতন নূতন সুখের আকাঙ্ক্ষা জন্মে। পূর্বে যাহা নিম্প্রয়োজনীয় বলিয়া বােধ