পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৯).pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ दिदिक्ष প্ৰবন্ধ ه و বোধ হয়, এখন বুঝিতে পারা যায় যে, দ্রৌপদীর পাঁচ স্বামীর ঔরসে কেবল এক একটি পুত্র কেন ? হিন্দু শাস্ত্রানুসারে পুত্রোৎপাদন ধৰ্ম্ম ; গৃহীর তাহাতে বিরতি অধৰ্ম্ম। পুত্র উৎপন্ন হইলে বিবাহ সফল হইল ; না হইলে, ধৰ্ম্ম অসম্পূর্ণ রহিল। কিন্তু ধৰ্ম্মের যে প্রয়োজন, এক পুত্রেই তাহা সিদ্ধ হয়। একাধিক পুত্রের উৎপাদন ধৰ্ম্মার্থে নিম্প্রয়োজনীয় —কেবল ইন্দ্ৰিয়তৃপ্তির ফল মাত্র। কিন্তু দ্রৌপদী ইন্দ্ৰিয়সুখে নির্লিপ্ত ; ধৰ্ম্মের প্রয়োজন সিদ্ধ হইলে, স্বামিগণের সঙ্গে তাহার ঐন্দ্ৰিয়িক সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন হইল। স্বামীর ধৰ্ম্মার্থ দ্রৌপদী সকল স্বামীর ঔরসে এক এক পুত্র গর্ভে ধারণ করিলেন ; তৎপরে নির্লেপ্যবশতঃ আর সন্তান গর্ভে ধারণ করিলেন না। কবির কল্পনার এই তাৎপৰ্য্য। এই সকল কথার তাৎপৰ্য্য বোধ করি, কেহই এমন বুঝিবেন না যে, যে স্ত্রীলোক অনাসঙ্গ ধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিবে, সেই পাঁচ ছয়টি মনুষ্যকে স্বামিত্বে বরণ করিবে-তাহ নহিলে ধৰ্ম্মের সাধন হইবে না। তাৎপৰ্য্য এই মাত্ৰ যে, যাহার চিত্তশুদ্ধি হইয়াছে, মহাপাতকে পড়িলেও পাপ তাহাকে স্পর্শ করিতে পারে না। দ্ৰৌপদীর অদৃষ্ট - যাহা ঘটিয়াছিল, স্ত্রীলোকের পক্ষে তেমন মহাপাপ আর কিছুই “নাই। কিন্তু দ্ৰৌপদীর চিত্তশুদ্ধি জন্মিয়াছিল বলিয়া, তিনি সেই মহাপাপকেও ধৰ্ম্মে পরিণত করিয়াছিলেন । আমি প্রথম প্ৰবন্ধে দেখিয়াছি যে, দ্ৰৌপদী ধৰ্ম্মবলে অত্যন্ত দৃপ্ত ; সে দৰ্প কখন কখন ধৰ্ম্মকেও অতিক্রম করে। সেই দৰ্পের সঙ্গে এই ইন্দ্ৰিয়জয়ের কোন অসামঞ্জস্য নাই | তবে তাহার নিষ্কাম ধৰ্ম্ম সর্বাঙ্গীন সম্পূর্ণতা প্ৰাপ্ত হইয়াছিল কি না, সে স্বতন্ত্র কথা।