পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSV বিবিধ প্ৰবন্ধ বলিয়া বোধ হয় না। কিন্তু অস্মদেশীয় পুরাণসকলে যে সৃষ্টিক্রিয়া বর্ণিত আছে, তাহা এই সাংখ্যের মতে ব্ৰহ্মাণ্ডের কথার সংযোগ মাত্র । বেদে কোথাও সাংখ্যদর্শনানুযায়ী সৃষ্টি কথিত হয় নাই। ঋগ্বেদে, অথৰ্ব্ববেদে, শতপথ ব্ৰাহ্মণে সৃষ্টিকথন আছে, কিন্তু তাহাতে মহাদাদির কোন উল্লেখ নাই। মনুতেও সৃষ্টিকথন আছে, তাহাতেও নাই, রামায়ণেও ঐরূপ। কেবল পুরাণে আছে। অতএব বেদ, মনু, রামায়ণের পরে ও অন্ততঃ বিষ্ণু, ভাগবত এবং লিঙ্গপুরাণের পূর্বে সাংখ্যদর্শনের সৃষ্টি । মহাভারতেও সাংখ্যোর উল্লেখ আছে, কিন্তু মহাভারতের কোন অংশ নূতন, কোন অংশ পুরাতন, তাহা নিশ্চিত করা ভার। কুমারসম্ভবের দ্বিতীয় সর্গে যে ব্ৰহ্মস্তোত্র আছে, তাহা সাংখ্যানুকারী। সাংখাপ্রবচনে বিষ্ণু, হরি, রুদ্রাদির উল্লেখ নাই । পুরাণে অাছে, পৌরাণিকেরা নিরীশ্বর সাংখ্যাকে আপন মনোমত করিয়া গড়িয়া লইয়াছেন । प्लूथ अद्धिष्छत নিরীশ্বরতা সাংখ্যদর্শন নিরীশ্বর বলিয়া খ্যাত ; কিন্তু কেহ কেহ বলেন যে, সাংখ্য নিরীশ্বর নহে । ডাক্তার হল একজন এই মতাবলম্বী । মক্ষমূলর এই মতাবলম্বী ছিলেন, কিন্তু এক্ষণে তঁহার মত পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা গিয়াছে। কুসুমাঞ্জলিকৰ্ত্তী উদয়নাচাৰ্য্য বলেন যে, সাংখ্যমতাবলম্বীরা আদিবিদ্বানের উপাসক । অতএব তঁহার মতেও সাংখ্য নিরীশ্বর নহে । সাংখ্যপ্রবচনের ভাষ্যকার বিজ্ঞানভিক্ষুও বলেন যে, ঈশ্বর নাই, এ কথা বলা বাপিল সূত্রের উদ্দেশ্য নহে। অতএব সাংখ্যদর্শনকে কেন নিরীশ্বর বলা যায়, তাহার কিছু বিস্তারিত লেখা যাউক । সাংখ্যপ্ৰবচনের প্রথমাধ্যায়ের বিখ্যাত ৯১ সূত্র এই কথার মূল । সে সূত্র এই-- “ঈশ্বরাসিদ্ধেঃ ” প্রথম এই সূত্রটি বুঝাইব । সূত্ৰকার প্রমাণের কথা বলিতেছিলেন । তিনি বলেন, প্ৰমাণ ত্ৰিবিধ , প্ৰত্যক্ষ, অনুমান এবং শব্দ । ৮৯ সূত্রে প্রত্যক্ষের লক্ষণ বলিলেন, “যৎ সম্বন্ধসিদ্ধং তদাকারোল্লেখি বিজ্ঞানং তৎ প্রত্যক্ষম।” অতএব যাহা সম্বন্ধ নহে, তাহার প্রত্যক্ষ হইতে পারে না । এই লক্ষণ প্ৰতি দুইটি দোষ পড়ে। যোগিগণ যোগবলে অসম্বদ্ধও প্ৰত্যক্ষ করিতে পারেন । ৯০ ৷৷৯১ সূত্রে সূত্রকার সে দোষ অপনীত করিলেন। দ্বিতীয় দোষ, ঈশ্বরের