পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S: বিবিধ প্ৰবন্ধ ( ১৮) অথর্ববেদান্তৰ্গত আয়ুৰ্ব্বেদে আছে যে, আয়ুৰ্বেদ ব্ৰহ্মা মনে মনে জানিয়া ছিলেন। আয়ুৰ্বেদ অথর্ববেদান্তর্গত বলিয়া অথর্ববেদের ঐরাপ উৎপত্তি বুঝিতে হইবে । বেদের মন্ত্র, ব্ৰাহ্মণ, উপনিষদ এবং আরণ্যকে, এবং স্মৃতি, পুরাণ ও ইতিহাসে বেদোৎপত্তি বিষয়ে এইরূপ আছে। দেখা যাইতেছে যে, এ সকলে বেদের সৃষ্টত্ব এবং পৌরুষেয়ত্ব প্ৰায় সর্বত্র স্বীকৃত হইয়াছে—কদাচিৎ আপৌরুষেয়ত্ব ও কথিত হইয়াছে। কিন্তু পরবর্তী টীকাকার ও দার্শনিকেরা প্ৰায় আপৌরুষেয়ত্ব-বাদী , তাহাদিগের মত নিম্নে লিখিত হইতেছে। ( ১৯ ) সায়নাচাৰ্য্য বেদার্থপ্রকাশ নামে ঋগ্বেদের টাকা করিয়াছেন । তাহাতে তিনি বলেন যে, বেদ আপৌরুষেয় । কিন্তু বেদ মনুষ্যকৃত নহে বলিয়াই অপৌরুষেয় दgठाका । ( ২০ ) সায়নাচাৰ্য্যের ভ্ৰাতা মাধবাচাৰ্য্যও বেদার্থপ্রকাশ নামে তৈত্তিরীয় যজুৰ্ব্বেদের টীকা করিয়াছেন । তিনি বলেন, বেদ নিত্য। তবে তিনি এই অর্থে নিত্য বলেন যে, কাল আকাশ্যাদি যেমন নিত্য, সেইরূপ বেদ । ব্যবহারকালে কালিদাসাদিবাক্যাবৎ পুরুষবিরচিত নহে বলিয়া নিত্য। এবং তিনি ব্ৰহ্মাকে বেদব গুণ বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন । ( ২১ ) মীমাংসকেরা বলেন, বেদ নিত্য এব” আপৌরুষেয় । শব্দ নিত্য বলিয়া বেদ নিত্য | শঙ্করাচাৰ্য্য এই মতাবলম্বী । ( ১১ ) নৈয়ায়িকেরা তাহার প্রতিবাদ করিয়া বলেন, বেদ পৌরুষেয় |—— মন্ত্র ও আয়ুৰ্ব্বেদের ন্যায়, জ্ঞানী ব্যক্তির কথা প্রামাণ্য বলিয়াই বেদ ও প্রামাণ্য বোধ হয়। গৌতমসূত্রের ভাবে বেদকে মনুষ্যপ্রণীত বলিয়া নির্দেশ করা ভঁাহার ইচ্ছা কি না, নিশ্চিত বুঝা 23 ( ২৩ ) বৈশেষিকেরা বলেন, বেদ ঈশ্বরপ্রণীত । কুসুমাঞ্জলিকৰ্ত্তা উদয়নাচাৰ্য্যের এই মত । এই সমস্ত শাস্ত্রের আলোচনা করিয়া দেখা যায় যে, কেহ বলেন, বেদ নিত্য এবং অপৌরুষেয় ; কেহ বলেন, বেদ সৃষ্ট এবং ঈশ্বরপ্রণীত । ইহা ভিন্ন তৃতীয় সিদ্ধান্ত হইতে পারে না। কিন্তু সাংখ্যপ্ৰবচনকারের মত সৃষ্টিছাড়া । তিনি প্রথমতঃ বলেন যে, নেদ কদাপি নিত্য হইতে পারে না ; কেন না, বেদেই তাহার কাৰ্য্যত্বের প্ৰেমাণ আছে-যথা “স তপোহতিপ্যতে তস্মাৎ তপস্তেপান ত্ৰয়ো বেদা অজয়ন্ত ।” যেখানে বেদেই বলে যে, এই এই রূপে বেদের জন্ম হইয়াছিল, সেখানে বেদ কদাপি নিত্য এবং অপৌরুষেয় হইতে পারে না । কিন্তু যাহা অপৌরুষেয় নহে, তাহ অবশ্য পৌরুষেয় হইবে । কিন্তু