পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s Sidd একটা কথাতেই তাহা বুঝা যায়। তিনি পরে বলিতেছেন, “দান, যজ্ঞ, সাধুগণের পূজা, বেদাধ্যয়ন ও আর্জব, এই কয়েকটি প্রধান ধৰ্ম্ম।” বস্তুতঃ আমরা এখন যাহাকে ধৰ্ম্ম বলি, তাহা দ্বিবিধ ; এক আত্ম-সম্বন্ধী, আর এক পর-সম্বন্ধী। পারসম্বন্ধী ধৰ্ম্মই ধৰ্ম্মের প্রধান অংশ ; কিন্তু আত্মসম্বন্ধী ধৰ্ম্মও আছে, এবং তাহা একেবারে পরিহার্য নয়। আমি পরকে সুখে রাখিয়া যদি আপনিও সুখে থাকিতে পারি, তবে তাহা না করিয়া, ইচ্ছাপূর্বক কষ্ট সহিব কেন ? ইচ্ছাপূর্বক নিম্বফল কষ্ট পাওয়া অধৰ্ম্ম । এখানে ভীমসেন সেই পার-সম্বন্ধী ধৰ্ম্মকেই ধৰ্ম্ম বলিতেছেন, এবং আত্ম সম্বন্ধী ধর্মের ফলভোগকে কাম বলিতেছেন। তাহা বুঝিলে, “কেবল ধৰ্ম্মপর হইবে না।” এ কথা সঙ্গত বলিয়া বোধ হয় । বস্তুতঃ ধৰ্ম্মকে আত্মসম্বন্ধী, এবং পর সম্বন্ধী, এরূপ বিভাগ করা উচিত নহে। ধৰ্ম্ম এক ; ধৰ্ম্ম মাত্র আত্মসম্বন্ধী ও পর সম্বন্ধী । অনেকে বলেন যে, ধৰ্ম্ম কেবল পারসম্বন্ধী হওয়াই উচিত। আবার অনেকে বলেন, যথা খি বৃষ্টিয়ানেরা, যে, যাঠাতে আমি পরকালে সদগতি লাভ করিব, তাহাই ধৰ্ম্ম । অর্থাৎ তঁহাদের মত, ধৰ্ম্ম কেবল আত্মসম্বন্ধী । স্থূল কথা, ধৰ্ম্ম আত্মসম্বন্ধীও নহে, পর সম্বন্ধীও নহে। সমস্ত বৃত্তিগুলির উচিত অনুশীলন ও পরিণতিই ধৰ্ম্ম । তাহা আপনার ও ন্যও করিবে না, পরের জন্যও করিবে না। ধৰ্ম্ম বলিয়াই করিবে। সেই বৃত্তিগুলি নিজ-সম্বন্ধিনী ও পর-সম্বন্ধিনী ; তাহার অনুশীলনে স্বাের্থ ও পরার্থ একত্রে সিদ্ধ হয়। ফলতঃ ধৰ্ম্ম এই ভাবে বুঝিলে স্বার্থে এবং পরার্থে প্রভেদ উঠাইয়া দেওয়া অনুশীলনবাদের একটি উদ্দেশ্য। “ধৰ্ম্মতত্ত্বে” এই অনুশীলনবাদ বুঝান গিয়াছে।