পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S o o বিবিধ প্ৰবন্ধ-দ্বিতীয় ভাগ হইতেছে। এরূপ মত সুসঙ্গত । মিল এরূপ মত ইঙ্গিতেও ব্যক্ত করিয়াছেন কি না, তাহা র্তাহার জীবনচরিত যে না পড়িয়াছে, তাহার সংশয় হইতে পারে। এ জন্য ইংরেজি হইতে আমরা কিঞ্চিৎ উদ্ধৃত করিতেছি । "The only admissible moral theory of Creatio is that the principle of good cannot at once and altogether subdue the powers of evil, either physical or moral; could not place mankind in a world free from the necessity of an incessant struggle with the maleficent powers, or make then victorious in that struggle, but could and did make them capable of carrying on the fight with vigour and with progressively 1ncreasing success. Of all the religious explanations of the order of nature, this alone is neither contradictory to itself, nor to the facts for which ut attempts to account.”* যদি এ কথার কোন অর্থ থাকে, তবে সে অর্থ এই যে, জগতের পালনকৰ্ত্তা এবং ংহারকীৰ্ত্তা স্বতন্ত্র, এমত কথা অসঙ্গত নহে। ইহার উপর যদি একজন পৃথক সৃষ্টিকৰ্ত্তা পাওয়া যায়, তাহা হইলে ত্রিদেবের নৈসর্গি, কি ভিত্তি পাওয়া গেল । মিলে তাহা পাওয়া যাইবে না ; মিলে হিন্দু নহেন, হিন্দুর পক্ষসমর্থন জন্য লিখেন নাই । তিনি নিৰ্ম্মণকৌশল হইতে ঈশ্বরের অস্তিত্ব সংস্থাপন করিয়াছেন, নিৰ্ম্মাতা ভিন্ন সৃষ্টিকৰ্ত্তা মানেন না। কিন্তু বিজ্ঞানে বলে, জীবের জন্ম নিৰ্ম্মাণ মাত্র ; ভৌতিক পদার্থের সমবায়বিশেষ জীবত্ব। এই পৃথিবীতে যাহা কিছু দেখি—জীব উদ্ভিদ বায়ু বারি মৃৎপ্রস্তরাদি, সকলই সেইরূপে নিৰ্ম্মিত ; পৃথিবী ও তাই ; সূৰ্য্য, চন্দ্র, গ্রহ, উপগ্রহ, ধূমকেতু, নক্ষত্র, নীহারিকা, সকলই নিৰ্ম্মিত । অতএব সকলই সেই নিৰ্ম্মাতার কীৰ্ত্তি—তাহার হস্তপ্ৰসূত । সচরাচর সৃষ্টিকৰ্ত্তা র্যাহাকে বলা যায়, ঈদৃশ নিৰ্ম্মাতার সঙ্গে তঁাহার প্রভেদ অল্প । যে আকারশূন্য, শক্তিবিশিষ্ট, পরমাণুসমষ্টিতে এই বিশ্ব গঠিত, তাহা নিৰ্ম্মিত কি না-নিৰ্ম্মাতার হস্তপ্ৰসূত কি না—তাহার কেহ স্রষ্টা আছেন কি না, তদ্বিষয়ে প্রমাণাভাব। এইটুকু স্মরণ রাখিয়া, সৃষ্টিকৰ্ত্তা শব্দের প্রচলিত অর্থে নিৰ্ম্মাতাকে সৃষ্টিকৰ্ত্তা বলা যাইতে পারে। তাহা হউক বা না হউক, ঈদৃশ স্রষ্টার সঙ্গেই ধৰ্ম্ম এবং বিজ্ঞানের নিকট সম্বন্ধ। অতএব তঁহাকে পাইলেই আমাদিগের অভিপ্ৰায় সিদ্ধ হইল । মিল বলেন, তাহার অস্তিত্ব প্রমাণীকৃত। তবে মিল, নিৰ্ম্মাতা এবং পালন বা রক্ষাকৰ্ত্তার মধ্যে প্ৰভেদ করেন না । ইউরোপে কেহ এরূপ প্ৰভেদ স্বীকার করে । এরূপ স্বীকার না করিবার কারণ ইহাই দেখা যায় যে, জন্মও জাগতিক নিয়মাবলীর ফল, রক্ষাও জাগতিক নিয়মাবলীর ফল ; যে নিয়মাবলীর ফল জন্ম বা সৃজন, সেই নিয়মাবলীর Mill on Nature, p. p. 88-39.