পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

、8 বিবিধ প্ৰবন্ধ রাগেই এইরূপ পীড়িত করিয়া, প্ৰথমে জিজ্ঞাসা করিলেন, “মহারাজ ! কুমার লক্ষ্মণ ভাল আছেন ত ?” কিন্তু সে কথা রামের কানে গেল না-তিনি সীতাকরকমলবিকীর্ণ জলে পরিবদ্ধিত বৃক্ষ, সীতাকরকমলবিকীর্ণ নীবারে পুষ্ট পক্ষী, সীতাকরকমলকীর্ণ তৃণে প্রতিপালিত হরিণগণকেই দেখিতেছিলেন । বাসন্তী আবার জিজ্ঞাসা করিলেন, “মহারাজ ! কুমার লক্ষ্মণ কেমন আছেন ?” এবার রাম কথা শুনিতে পাইলেন, কিন্তু ভাবিলেন, বাসস্তী “মহারাজ !” বলিয়া সম্বোধন করিলেন কেন ? এ ত নিম্প্রণয় সম্বোধন । আর কেবল কুমার লক্ষ্মণের কথাই জিজ্ঞাসিলেন, তবে বাসন্তী সীতা বিসৰ্জনবৃত্তান্ত জানেন । রাম প্ৰকাশ্যে কেবল বলিলেন, “কুমারের কুশল,” এই বলিয়া নীরবে রোদন করিতে লাগিলেন। বাসন্তী তখন মুক্তকণ্ঠ হইয়া কহিলেন, “দেব ! এত কঠিন হইলে কি প্রকারে ? छु९ औ१ि९छ६ फुभणि ८१ ट्रु९ क्ठिौशू९ ত্বং কৌমুদী নয়নয়োরমৃতং ত্বমঙ্গে । তুমি আমার জীবন, তুমি আমার দ্বিতীয় হৃদয়, তুমি নয়নের কৌমুদী, অঙ্গে তুমি আমার অমৃত,—এইরূপ শত শত প্রিয় সম্বোধনে যাহাকে ভুলাইতে, তাহাকে—” বলিতে বলিতে সীতাম্মুতিমুগ্ধা বাসস্তী আর বলিতে পারিলেন না ; অচেতন হইলেন। রাম তঁহাকে আশ্বস্তা করিলেন । চেতনা পাইয়া বাসন্তী কহিলেন, “আপনি কেমন করিয়া এ কাজ করিলেন ?” রাম । লোকে বুঝে না বলিয়া । বাসন্তী। কেন বুঝে না ? রাম । তাহারাই জানে । তখন বাসন্তী আর সহিতে পারিলেন না। বলিলেন, “নিষ্ঠুর ! দেখিতেছি, কেবল যশঃ তোমার অত্যন্ত প্ৰিয় ।” এই কথোপকথনের সমুচিত প্ৰশংসা করা দুঃসাধ্য। সীতা বিসর্জন জন্য বাসন্তী রামপ্রতি ক্ৰোধযুক্ত হইয়াছিলেন, তিনি মানসিক যন্ত্রণারাপ সেই অপরাধের দণ্ড প্ৰণীত করিলেন, সহজেই রামের শোকসাগর উছলিয়া উঠিল। রামের যে একমাত্ৰ শোকোপশমের উপায় ছিল-আত্মপ্ৰসাদ, তাহাও বিনষ্ট করিলেন । রাম জানিতেন যে, তিনি প্ৰজারঞ্জনরূপ কুলধৰ্ম্মের রক্ষার্থই সীতা বিসর্জনরাপ মৰ্ম্মচ্ছেদী কাৰ্য্য করিয়াছেন -মৰ্ম্মচ্ছেদ হউক, ধৰ্ম্ম রক্ষা হইয়াছে। বাসন্তী দেখিলেন যে, সে ধৰ্ম্মরক্ষা কেবল স্বার্থপরতার পৃথক একটি নামমাত্র। সে কুলধৰ্ম্ম রক্ষার বাসনা কেবল রূপান্তরিত যশোলিপস মাত্র। কেবল যশোলাভের স্বশর্থপর বাসনার বশবৰ্ত্তী হইয়া রাম এই কাজ করিয়াছেন। বাসন্তী আরও দেখিলেন যে, যে যশের আকাজক্ষায় তিনি এই নিষ্ঠুর, কাৰ্য্য করিয়াছিলেন, সে আকাজক্ষাও