পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/৩৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दांठांव्ग ऊभ Y©ዕ 0 হইতেছে যে, ঐরূপ ভাষায় গ্ৰন্থরচনা করা উচিত কি না ?-আমাদের বোধে অবশ্য উচিত। যেমন ফলারে বসিয়া অনবরত মিঠাই মণ্ড খাইলে জিহবা একরূপ বিকৃত হইয়া যায়—মধ্যে মধ্যে আদার কুচি ও কুমড়ার খাট্টা মুখে না দিলে সে বিকৃতির নিবারণ হয় না, সেইরূপ কেবল বিদ্যাসাগরী রচনা শ্রবণে কর্ণের যে একরূপ ভাব জন্মে, তাহার পরিবর্তন করুণার্থ মধ্যে মধ্যে অপরবিন্ধ রচনা শ্রবণ করা পাঠকদিগের उांद*]त ।” আমরা ইহাতে বুঝিতেছি যে, প্রচলিত ভাষা ব্যবহারের পক্ষে হ্যায়রত্ন মহাশয়ের প্রধান আপত্তি যে, পিতা পুত্রে একত্রে বসিয়া এৰূপ ভাষা ব্যবহার করিতে পারে না । বুঝিলাম যে, ন্যায়রত্ন মহাশয়ের বিবেচনায় পিতা পুত্রে বড় বড় সংস্কৃত শব্দে কথোপকথন করা কীৰ্ত্তব্য ; প্রচলিত ভাষায় কথাবাৰ্ত্ত হইতে পারে না । এই আইন চলিলে বোধ হয়, ইহার পর শুনিব যে, শিশু মাতার কাছে খাবার চাহিবার সময় বলিবে, “হে মাতঃ, খাদ্যং দেহি মে” এবং ছেলে বাপের কাছে জুতার আবদার করিবার সময় বলিবে, “ছিন্নেয়ং পাদুকা। মদীয়া ।” ন্যায়রত্ন মহাশয় সকলের সম্মুখে সরল ভাষা ব্যবহার করিতে লজ্জা বোধ করেন, এবং সেই ভাষাকে শিক্ষাপ্ৰদ বিবেচনা করেন না, ইহা শুনিয়া তাহার ছাত্রদিগের জন্য আমরা বড় দুঃখিত হইলাম। বোধ হয়, তিনি স্বীয় ছাত্ৰগণকে উপদেশ দিবার সময়ে লজ্জাবশতঃ দেড়গজী সমাসপরম্পৰা বিন্যাসে তাহাদিগের মাথা ঘুরাইয়া দেন । তাহারা যে এবংবিধ শিক্ষায় অধিক বিদ্যা উপার্জন করে, এমত বোধ হয় না । কেন না, আমাদের স্থূল বুদ্ধিতে ইহাই উপলব্ধি হয় যে, যাহা বুঝিতে না পারা যায়, তাহা হইতে কিছু শিক্ষালাভ হয় না। আমাদের এইরূপ বোধ আছে যে, সরল ভাষাই শিক্ষা প্ৰদ । ন্যায়রত্ন মহাশয় কেন সরল ভাষাকে শিক্ষা প্ৰদা নহে বিবেচনা করিয়াছেন, তাহা আমরা অনেক ভাবিয়া স্থির করিতে পারিলাম না । বোধ হয়, বাল্যসংস্কার ভিন্ন আর কিছুই সরল ভাষার প্রতি র্তাহার বীতরাগের কারণ নহে । আমরা আরও বিস্মিত হইয়া দেখিলাম যে, তিনি স্বয়ং যে ভাষায় বাঙ্গালাসাহিত্য বিষয়ক প্ৰস্তাব লিখিয়াছেন, তাহাও সরল প্ৰচলিত ভাষা । টেকচাদি। ভামার সঙ্গে এবং তঁহার ভাষার সঙ্গে কোন প্ৰভেদ নাই, প্ৰভেদ কেবল এই যে, টেকচাদে রঙ্গরস আছে, ন্যায়রত্বে কোন রঙ্গরস নাই । তিনি যে বলিয়াছেন যে, পিতাপুত্রে একত্র বসিয়া অসঙ্গুচিত মুখে টেকচাদী ভাষা পড়িতে পারা যায় না, তাহার প্রকৃত কারণ টেকচাদে রঙ্গারস আছে । বাঙ্গালাদেশে পিতা পুত্রে একত্ৰ বসিয়া রঙ্গরস পড়িতে পারে না । সরলচিত্ত্ব অধ্যাপক অতটুকু বুঝিতে না পারিয়াই বিদ্যাসাগরী ভাষার মহিমা কীৰ্ত্তনে প্ৰবৃত্ত হইয়াছেন । ভাষা হইতে রঙ্গরস, উঠাইয়া দেওয়া যদি ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয়দিগের মত হয়, তবে তঁাহারা সেই বিষয়ে