পাতা:বিবিধ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯৫৯).pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やこ বিবিধ প্ৰবন্ধ পতিগণ দাসত্বৰূপ দারুণ পাপপঙ্কে নিমগ্ন হইয়া পুনরায় উদ্ধত হইলেন, উহারা পুণ্য কৰ্ম্মানুষ্ঠান দ্বারা শ্ৰেয়েলাভ করিতে পরিবেন ।” এইরূপ ধৰ্ম্ম ও গর্বের সুসামঞ্জস্যই দ্রৌপদীচরিত্রের রমণীয়তার প্রধান উপকরণ । যখন জয়দ্ৰথ তাহাকে হরণমানসে কাম্যাকবনে একাকিনী প্ৰাপ্ত হয়েন, তখন প্ৰথমে দ্রৌপদী তঁহাকে ধৰ্ম্মচারীসঙ্গত অতিথিসমুচিত সৌজন্যে পরিতৃপ্ত করিতে বিলক্ষণ যত্ন করেন ; পরে জয়দ্ৰথ আপনার দূরভিসন্ধি ব্যক্ত করায়, ব্যাস্ত্রীর ন্যায় গর্জন করিয়া আপনার তেজোরাশি প্ৰকাশ করেন। তঁাতার সেই তেজোগৰ্ব্ব বচন পরম্পরা পাঠে মন আনন্দসাগরে ভাসিতে থাকে। জয়দ্ৰথ তাতাতে নিরস্ত না হইয়া ভঁাহাকে বলপূর্বক আকর্ষণ করিতে গিয়া তাহার সমুচিত প্ৰতিফল প্ৰাপ্ত হয়েন ; যিনি ভীমার্জেনের পত্নী, এবং পুষ্ট দৃশ্নের ভগিনী, তাহার বাহুবলে ছিন্নমূল পাদপের ন্যায় মহাবীর সিন্ধুসেী বীরাধিপতি ভূতলে পাতিত হয়েনি। পরিশেষে জয়দ্ৰথ পুনর্বার বল প্রকাশ করিয়া ভঁাহাকে রথে তুলেন ; তখন দ্ৰৌপদী যে আচরণ করিলেন, তাহা নিতান্ত তেজসিঙ্গী বীরনগরীর কার্যা । তিনি বৃথা বিলাপ ও চীৎকার কিছুই করিলেন না ; অন্যান্য স্ত্রীলোকের ন্যায় একবাল ও অনাবধান এবং বিলম্বকারী স্বামিগণের উদ্দেশ্যে ভৎসনা করিলে, না ; কেবল কুলপুরোহিত ধৌম্যের চরণে প্ৰণিপাতপূৰ্ব্বক জয়দ্রথের রথে আরোহণ করিলেন। পরে যখন জয়ন্দথা দৃশ্যমান পাণ্ডবদিগের পরিচয় জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন, তখন তিনি জয়ন্দন্থের পৃথস্থা হইয়াও যেরূপ গকিবত বচনে ও নিঃশঙ্কচিত্তে অবলীলাক্রমে স্বামীদিগের পরিচয় দিতে লাগিলেন, তাহা পুনঃ পুনঃ পাঠের যোগ্য ।