পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»ፃ8 বিবিধ প্রবন্ধ । পৃথকৃভূত নয়। বার, তিথি, ঋতু ভেদে ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্ম কাৰ্য্যের অনুষ্ঠান করিবার বিধি আছে সত্য, কিন্তু সে সকল বিধি কেবল নিয়ম রক্ষার অভ্যাস করাইবার নিমিত্ত -বাহ পুজা, মানস পূজা প্রভৃতির বিধি আছে সত্য, কিন্তু সে সকল চিত্তশুদ্ধির নিমিত্ত—আহার বিহারাদিও ধৰ্ম্ম নিয়ম দ্বারা দৃঢ়রূপে সম্বন্ধ হুইস্বাছে সত্য, কিন্তু সে স্বকল নিয়মের উদ্দেশু পশুভাবের একান্ত অপনয়ন । তন্ত্র শাস্ত্রের প্রকৃতিতে এই বৈচিত্র্য কি জন্য জন্মিয়াছে ? ইহা যে আর্য্যজাতীয়দিগের সম্বন্ধে নিতান্ত অভূতপূৰ্ব্ব ব্যাপার একথা বলা যায় না। প্রাচীন বেদ শাস্ত্রের প্রকৃতি পৰ্য্যালোচনা করিলে স্পষ্টই বুঝিতে পারা যায় যে, ক্রিয়াসাধন এবং ঐহিক সুখলাভই বৈদিক ঋষিদিগের বিলক্ষণ অতিলষিত ছিল। প্রাচীন বৈদিক ঋষির ষেরূপে যজ্ঞাদির অনুষ্ঠান করিতেন এবং তাহার দেবতাদিগের স্থানে যে সকল ঐহিক সুখ স্বাচ্ছন্দ্য প্রাপ্তির নিমিত্ত বরপ্রার্থনা করিতেন তাহাতে দেখা যায় ঐ সময়ে প্রবৃত্তির একান্ত নিরোধ আৰ্য্যজাতীয়দিগের অভিমত ছিল না । বস্তুতঃ অদ্ভু্যদয়োমুখ জাতির মধ্যে যেরূপ হইয় থাকে সেইরূপে নিবৃত্তিপুত প্রবৃত্তির প্রাবল্য আৰ্য্যদিগের মধ্যে হইয়াছিল। তাহার পর জ্ঞানের চর্চা, ভক্তির চর্চা, যোগ সমাধির অ ২ষ্ঠান, প্রবৃত্তির একান্ত নিরোধ, নিশ্চেষ্টত, দৌৰ্ব্বল্য এবং অধঃপাত। সেই অধঃপাতের পর তন্ত্রশাস্ত্রের আবির্ভাব, সুতরাং যাহাতে আর্য্যজাতীয়দিগের পুনৰ্ব্বার উত্থান সাধন হয় তাহাষ্ট তন্ত্রশস্ত্রকারদিগের অবগু অভিলষিত হইয়া থাকিবে। এই জন্তই তন্ত্রশাস্ত্রে আবার উন্নতির অভিলাষ, আবার প্রবৃত্তির উত্তেজনা, আবার নিবৃত্তির দ্বারা প্রবৃত্তির সংস্করণের উপায়ের ভাবনা । এই জন্তই বঙ্গ সমাজের সুপ্রসিদ্ধ সংস্কারকর্তা রামমোহন রায় তন্ত্রবিশেষকেই অবলম্বস্বরূপ করিয়া ধৰ্ম্মসংস্কারে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন, এই জন্তই তন্ত্রোক্ত অনেক কথার সহিত বৈদিক উপনিষদাদির ঐক্য দেখিতে পাইয়াছিলেন। আধুনিক ব্রাহ্মের জানুন বা নাই জামুন, তন্ত্রশাস্ত্রই তাহাদিগের মতবাদের ভিত্তিমূল । ব্ৰাহ্ম ধৰ্ম্মসংহিতায় এমন কোন সার কথা নাই যাহা তন্ত্র শাস্ত্র হইতে সমুদ্ধত নহে। নব্য ব্রান্ধের আপনাদিগের শাস্ত্রকে প্রাচীন শাস্ত্র সমূহ হইতে পৃথকৃভূত মনে করিয়া ষে আপনাদিগের পদ্ধতির প্রকৃত ভাব রক্ষা করিলেন, কি জাতীয় ভাবের দৃঢ়ত৷ সাধন করিলেন, কি সেই পদ্ধতিরই সৰ্ব্বাঙ্গ সম্পন্নতার অনুকুলতা করিলেন এরূপ বোধ হয় না। এই অসংখ্য দলে বিভক্ত আন্ত বিচ্ছেদে বিচ্ছিন্ন পরস্পর প্রতিকুলাচারী ঈর্ষ্যাম্বেষ মাৎসৰ্য্য-সমাকুল হিন্দুসমাজে