পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ss বিবিধ প্রবন্ধ । যে, শিশুরা কি মৌলবী, কি পণ্ডিত, কি পাদ্রি কাহার পরিজ্ঞাত কোন ভাষার শব্দই উচ্চারণ করে না—কেবল হাত পা নাড়িয়া এবং নানাপ্রকার মুখভঙ্গী করিয়া এবং মধ্যে মধ্যে অপরিস্ফুট শব্দ করিয়া আপনাদিগের মনোগত ভার প্রকাশ করিতে পারে । আকবর সাহের অতুষ্ঠিত এই পরীক্ষা বিধানের বিবরণ সত্য হউক বা না হউক, ইঙ্গর মধ্যে একট প্রকৃত তথ্য নিহিত আছে । মনুষ্যের প্রথমতঃ অঙ্গভঙ্গী দ্বারাই আপনাদিগের মনোগত ভাব ব্যক্ত করে। সেই সকল অঙ্গ ভঙ্গীর সঞ্চিত, যেমন পশ্বাদিরও হইয়া থাকে, তেমনি মমুন্যেরও মুখবিবর হইতে ভিন্ন ভিন্নরূপ শব্দ নির্গত হয় । যে প্রকার অঙ্গ ভঙ্গী এবং শব্দ একই সময়ে উদ্ভূত হয়, তদুভয়ই একই ভাবব্যঞ্জক বলিয় তাহাদিগের পরস্পরে এক প্রকার দৃঢ় সাদৃশু থাকে। যে পরিমাণে সেই সাদৃষ্ঠের উপলব্ধি হইতে থাকে, সেই পরিমাণে শব্দদ্বারা ভাবুপ্রিকাশ, অঙ্গভঙ্গী বা ইঙ্গিত দ্বারা ভাব প্রকাশের স্থান অধিকাব করে। কিন্তু নুতন শব্দস্তষ্টিরও বিশেষ বিশেষ ক্রম আছে। তাহার মধ্যে একটা ক্রম এই যে, যে দ্রব্য হইতে ধে প্রকার শব্দ শ্রুত হওয়া যায়, সেই শব্দের অনুকরণেই সেই দ্রব্যের নামকরণ হইয়া থাকে।* আর একটী ক্রম এই যে, যে দ্রব্য যেরূপ কাৰ্য্য করিতেছে বা করিয়া থাকে বলিয়া অনুভূত হয়, সেই কার্য্যের প্রকৃতি এবং নাম হইতে ঐ দ্রব্যের নামকরণ হয় । { এই দুইট নিয়ম বুঝিলেই ভাষাস্থষ্টির মূল কিরূপ, তাহা অনেকটা বুঝা যায় । কিন্তু কোন ভাষার সকল শব্দই যে, ঐ দুই প্রকারে সমুৎপন্ন হইয়াছে, তাহ :i: ত শং ধায় না । পৃথিবীতে যত ভাষা প্রচলিত আছে, তাহার মধ্যে অতি সঙ্কীর্ণতম ভাষাতেও এমন অনেক শব্দ থাকে, যাহাদিগকে উৎপত্তির ক্রম উল্লিখিত উভয় নিয়মের কোনটরই অন্তভুত বলিয়া বোধ হয় না । সৰ্ব্বনাম শব্দ, অব্যয় শব্দ এবং অপরাপর অনেক শব্দ ঐৰূপ । উহার কোন স্বাভাবিক ধ্বনির অনুকরণজীত অথবা স্বতঃই কোন ক্রিয়াবাচক মূল হইতে উৎপন্ন বলিয়া বোধ হয় না। পণ্ডিতেরা অনুমান করেন যে, ঐ সকল শব্দ উচ্চারণসৌকর্য্যের নিমিত্ত কালসহকারে এতদুর রূপান্তরিত হইয়া গিয়াছে যে, উহাদিগের উৎপত্তির প্রণালী সম্যক প্রকাশিত হওয়া সম্ভবপর নছে।

  • যথা-ক শব্দ হইতে “কাক” ।

যথা-কুর, কর, করিয়া কাটার শব্দ হইতে “করাত" |