পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান ) లన কণায়, জ্যোতি:কণায়, পৃথিবীসমূহের প্রতি তৃণে প্রতি ধূলিকণায় তিনি। তিনি আছেন তাই আমরা আছি, তোমরা আছ, বিশ্ব আছে । তিনি সকলেরই । তুমি চাও, তোমার–আমি চাই, আমার । 帶 গ্রহদেব বল্পেন—পুষ্প, বুদ্ধি দিয়ে তাকে বুঝতে যেও না। পারা যায় না । সে ইন্দ্রিয় তোমাদের নেই—তবে শুধু তাকে ভালবাসা দ্বারা মন ও বুদ্ধিকে অতিক্রম করে এমন তুমি লাভ করা যায় যে-ভূমি থেকে তাকে অনুভব করা যায়। নয়তে যার সে ক্ষমতা নেই-সেও যদি আকুল হয়ে ডাকে —তার মন ও বুদ্ধির গম্য হয়ে নিজেকে খুব ছোট করে সে ভক্তকে তিনি দেখা দেন । পৃথিবীতে কত লোক ইষ্টরূপে তাকে ভজনা করে । ছোটর কাছে ছোট হয়ে দেখা দেন তিনি—কত কৃপা তার । কিন্তু যে রূপ তার নিজের—-সে রূপে তাকে কে দেখতে পায়— —প্রভু, কেউ কি পায় না ? —ব্রহ্মলোকের বহু উধেবর্ণ র্তার নিজের লোক । দেখি নি, তবে জ্ঞান দ্বারা অনুভব করতে পারি। সেখানে হাজার হাজার কল্পের পূর্বেকার মুক্ত আত্মারা আছেন—কখনও দেখিনি তাদের। র্তারা মহাশক্তিধর, বিশ্বের স্বষ্টি স্থিতি লয় করবার ক্ষমতা রাখেন। তারাই তাকে স্বরূপে হয়তো দেখেন। কিন্তু মানুষের রূপে দেখতে চাও, তুমিও পাবে। ভক্তিভরে চাও। অত বড়ও কেউ নেই, আবার অত ছোটও কেউ নেই। যতীন বল্পে-প্রভু, এই পৃথিবীর মানুষে ভগবানকে জানে ? —সব পৃথিবীর অবস্থাই সমান। সত্য জানতে চায় ক’জন ? এখানে তো দেখচে, ইন্দ্রিয়জ মুখ নিয়ে সবাই মত্ত। সেই বিরাট মহাশক্তির ধারণা করা এদের পক্ষে সহজ নয় । অবং এরা পৃথিবীর জীবের চেয়ে অধিকতর জড়বুদ্ধিসম্পন্ন। বহুকাল যুগ-যুগান্ত কেটে যাবে এদের সমস্ত জড়ত, মনের মালিন্ত দূর করে সে ধারণা উদ্ব-দ্ধ করতে । কিন্তু বিশ্বের ভগবানের অসীম ধৈর্য । কাউকে তিনি অবহেলা করেন না। তবে অনেক দেরি হয়ে যাবে। যারা নিরলস আত্মা, আধ্যাত্মিক জ্যোতি যাদের মধ্যে জলচে স্বয়ম্প্রভ মহিমায়, তারা এক জন্মেই ঘুম ভেঙে চেয়ে দেখে । যেমন বলেছিলেন তোমাদের গ্রহের এক প্রাচীন কবি—বেদাহমেতং পুরুষং মহাস্তম্ আদিত্যবর্ণং তমস: পরস্তাৎ—আমি অন্ধকারের ওপারের সেই আদিত্যবর্ণ মহান পুরুষকে জেনেচি-ওগো শোনো সবাই শোনো—পৃন্বস্তু বিশ্বে অমৃতস্ত পুত্রাঃ । কত আনন্দ ! আনন্দের ভাগ সবাইকে না দিলে যেন চলচে না। কিন্তু ভাবে, ক'জন সেজন্যে ব্যগ্র ? আদিত্যবর্ণ পুরুষকে না জানলেও তাদের জন্মের পর জন্ম, যুগের পর যুগ, এমন কি কল্পের পর কল্প পরম আরামে অন্ধের মত, কেটে যাচ্চে চির-অন্ধকারে । তার ওপারে কি আছে কে সন্ধান রাখে ? যতীনের মনে একটা প্রশ্ন জাগলো। প্রশ্নটা সে করলে—র্তাদের মত অসীম শক্তিধর দেবতা কৃপা করলে তো একদিনে সে উদ্ধার হয় ! সত্যের প্রচার করে দিলেই তো হয় । দেবতার মুখে অনুকম্পার হাসি ফুটে উঠলো। বল্পেন—তা কি হয় ? যে পৃথিবী যে সত্যের জন্তে প্রস্তুত নয়, যে মানুষকে যে কথা বল্পে সে বুঝবে নী—সেখানে সে সত্য প্রচার করা হয়