পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান ১২৭ মোক থাকতো যদি সোয়ামী পুত্তর থাকতো। নিজের চেহারাট আয়নায় দেখেচ একবার ? আশা একা ঘরে ছেড়া মাদুরে শুয়ে আছে—তার মনে যে নিরাশার অন্ধকার ছেয়েচে, কোনোদিন তা ফুটে আলো বেরুবার সম্ভাবনা আছে কি ? হাতের পয়সা ফুরিয়েচে, আর বড় জোর দশটা দিন। তারপর ? গভীর রাত্রি কলকাতায়। আশা এখনও ঘুমোয়নি—দুশ্চিন্তায় ঘুম নেই চোখে । যতীন আকুল হয়ে ওর শিয়রে বসে ডাকলে—আশা আশা, লক্ষ্মীটি—আমি এসেচি चांश्ली পুষ্পও বসলো পাশে । পুষ্প যে ভবিষ্যৎ দেখচে, যতীন তা দেখবার শক্তি রাখে না । পুপ খুব দুঃখিত হোল। কর্মের অচ্ছেষ্ঠ বন্ধনে আশা-বোঁদর সঙ্গে যতীনদার গাটছড়া বজ্র-জাটুনিতে জাট । দুঃখ হয়, কিন্তু সে জানে, কিছু করবার নেই তার । সে এখানে গাড়ীর পঞ্চম চক্রের মত অনাবশ্যক । সে না থাকলেও কর্মের রথ দিব্যি চলবে । যতীন বল্পে—পুপ, আমায় সাহায্য করো— —ভাবচি— —কি ভাবচো ? —ভাবচি তোমার অদৃষ্ট যতীনদ—এখন কি হেঁয়ালি উচ্চারণ করবার সময় পুপ ? হায়! সে যা বলতে চাইচে, যতীনদাকে যদি কেউ তা বুঝিয়ে দিতে পারতো ! যতীনদী চিরকাল তাকে ভুল বুঝে আসচে, এখনও বুঝবে তা সে জানে। কিন্তু কি করবে সে, এ তারও অদৃষ্ট্রলিপি । পুপ দুঃখিত স্বরে বল্লে—ত বলিনি। তুমি বল্পে বুঝবে না আমার কথা। আশা-বোঁদির এ অবস্থা দেখে—আমি মেয়েমানুষ—আমার কষ্ট হচ্চে না তুমি বলতে চাও? কিন্তু কিছু সাহায্য করতে পারবো না তুমি আমি । আশা-বৌদিদির কর্মফল—এক ভগবান যদি বাধন কাটেন তবেই কাটে । তোমার আমার দ্বারা হবে না । 象 —এই রকম অবস্থায় ফেলে রেখে যাই কি করে তোর বৌদিদিকে—বল পুপ—ত পারি ? যতীনের কাতর উক্তিতে পুষ্পের চক্ষুদুটি অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠলো—আশালতার দুরবস্থার জন্মে নয়, অন্য কারণে। সে বল্পে—পৃথিবীতে থাকলে উপকার করতে পারতে। এ অবস্থায় আমি তো কোনো উপায় দেখচিনে । আচ্ছা—দেখি-একটু ভাবতে দাও— 鱷 পুপ একটু পরে বল্পে—এখানে থাকবে না। চলে যতীনদী। এখান থেকে যেতেই হবে। নইলে তোমার আসন্ন বিপদ। " যতীন বয়ে-তুমি বড় ভয় দেখাও, পুপ। চলো কক্ষপাদেবীর কাছে ধাই, তাকে সব বলি । —বলৰে কি, তিনি অস্তরের কথা জানতে পারেন । ওঁরা হোলেন উচ্চ স্বর্গের দেবদেবী । স্মরণ করলেই বুঝতে পারেন—কিন্তু সময় না হোলে আসেন না। বৃথা দেখা দেন না। তা ছাড়া কলকাতার এই বিত্র পাড়ায় তাকে আমি এনে এর সঙ্গে জড়াতে চাইনে।