পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ులు বিভূতি-রচনাবলী —কতবার প্রচার করা হয়েচে । আমার চেয়ে উচ্চতর ও শক্তিধর দেবতারা মানুষের দুঃখে পৃথিবীর শত কষ্টের মধ্যেও দেহ ধরে একথা বলতে গিয়েছিলেন। স্বয়ং ভগবান অবতার গ্রহণ করে নেমে গিয়েচেন বলতে । প্রেম—একটি কথা । কেউ শোনেনি । —তাহোলে কি আপনারা হাল ছেড়ে দেবেন ? —অদ্ভূত চরিত্র ভগবানের । বার বার স্বযোগ দেন। বিরক্ত হন না। অপূর্ব তার ধৈর্য, অপূর্ব তার ক্ষম। অন্য কেউ হোলে আর স্বযোগ দিত না-কিন্তু নাছোড়বান্দ তিনি। আবার লোক পাঠান অদ্ভুত ধৈর্ষের সঙ্গে । তোমাদের পৃথিবীতে ভগবানের তুল্য অবহেলিত প্রাণী আর কে ? কেউ তার কথা ভাবে না । 驗 এই পর্যন্ত বলেই অপুর্ব ঈশ্বরীয় প্রেমে মহাপুরুষের চোখ দুটি নক্ষত্রের মত জলজল করতে লাগলো। পুষ্প শ্রদ্ধায় ও উৎসাহে উদ্দীপ্ত হয়ে বল্লে—আপনি ঠিক বলেচেন দেব, পৃথিবীতে কেউ ভাবে না ভগবানের কথ। । যে ভাবে সেও টাকা চায়, যশ চায়, সাংসারিক মুখ চায় । প্রেমভক্তি দুর্লভ হয়ে পড়েচে । Q মহাপুরুষ বল্পেন—প্রেমভক্তি ছেড়ে দাও। ও অনেক উচু কথা। অতি সাধারণ ভাবেও ক’জন ভগবানের চিন্তা করচে । আমি পৃথিবীতে যাই, জনপদে বা তোমাদের বড় বড় নগরে যাই না। দুনিবার লোভ, অর্থাসক্তি, ঐশ্বর্থ-কামনা, নারী, স্বত্বা, কাম, হিংসা-দ্বেষ বাতাসে ছড়ানো ঘন ধোয়ার মত। ভাই ভাইএর বুকে ছুরি বসাচ্চে। সত্য বিদায় নিয়েচে. পৃথিবীর এখনকার দর্শন হচ্চে খাওয়-পরার দর্শন । কিসে ভাল খাবো, ভাল পরবো । আমি আপন মনে মরুভূমিতে বেড়াই জ্যোৎস্বারাত্রে, হিমালয় কি অন্য কোনো পর্বতচূড়ায় বসে থাকি, নীলনদ বড় ভালবাসি তার তীরে একা বসে থাকি । অথচ এক কথা—প্রেম, এই যদি ওরা শিখতো— জীবে প্রেম, ভগবানে প্ৰেম ! . . তিনি এই পর্যন্ত বলে চুপ করতে পুষ্প বল্পে—বলুন দেব, অমৃতের মত বাণী আপনার । —আমার ? আমার কিসের কন্যা ? এ বাণী স্বয়ং ভগবানের। তিনি অনেক উচু, তাই মামুধের দেহ ধরে পৃথিবীতে গিয়ে একথা বলে এসেছিলেন । কেননা মানুষের দেহ ধরে না গেলে মানুষের সাধ্য কি যে অসীমকে গ্রহণ করে ? একবার নয়, বার বার গিয়েছিলেন । ক্লাস্তিহীন তার আশীৰ্বাদ । কিন্তু কে শুনচে ? ধনজনের মোহে, লোভের মোহে, বিলাসের মোহে— স্থল ভোগের মোহে সবাই উন্মত্ত। একবারও যদি নির্জনে উচ্চতর সত্যের ধ্যান করতে মাছবে ! 疊 যতীন মুগ্ধ হয়ে শুনছিল। আজ এখানে আসা তার সার্থক হয়েচে বটে। সে বল্লে—তবে কি তাদের উদ্ধার নেই, দেব ? — একটা কথা মনে রেখো । জোর করে মামুষের ওপর কোনো সত্য, কোনো বাণী চাপানো যায় না। মামুষে তৈরী না হওয়া পর্যস্ত ভগবানের বাণী অন্তরালে ধৈর্ষের সঙ্গে অপেক্ষা করে বুদ্ধিহীন বা স্থূলবুদ্ধি ভোগাসক্ত মন হঠাৎ ভগবানকে গ্রহণ করতে পারে না। পারলেই যে মুক্তি--যে ভগবানকে ভালবাসে, সে ভগবানের সমান হয়ে যায়। এত সহজে তা