পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৬ বিভূতি-রচনাবলী —আমরা বহুযুগ পূর্বের আত্মা। আমাদের সমসাময়িক আত্মা এ লোকে আর নেই। আমরা পরম্পরের সাহায্যে পরম্পরে উন্নতিলাভ করচি। নিজেদের মনের সাহায্যে এই জনপদ নির্মাণ করে একত্র বাস কুরি, ভগবানের উপাসনা ধ্যানধারণা করি—সাধ্যমত পৃথিবীতে বা অন্ত গ্রহে গিয়ে স্থূল জগতের জীবদের উপকার করবার চেষ্টা করি। পৃথিবীতে যেমন গ্রাম জনপদ, স্বল্প জগতের এই সব জনপদ, বনৰীথি, উদ্যানেরই প্রতিচ্ছায়া মাত্র সে সব । তাদের বিকার আছে, এদের বিকার নেই। পুষ্প বল্লে—ভগবানকে স্বামী রূপে পেয়েচে সেই মেয়েটিকে একবার দেখাবেন না ? ওঁর ভাগ্য অদ্ভূত তো ! t দেবতা হেসে বল্লেন—ও সব হোল নারীর সাধনা । প্রেমভক্তির সাধনা—ভগবানের মায়িক রূপে দেখা পায় । তুমিও দেখা পেতে পারে কন্যা, যদি তোমার প্রেম জন্মে থাকে তার প্রতি । ভগবান কল্পতরু-স্বরূপ, যথার্থ পিপাসু ও আকুল ব্যক্তিকে নিরাশ করেন না। তবে আমি ওগুলোকে পুতুলখেলা বলে বিবেচনা করি । নারীর ধর্ম, পুরুষের নয়। পুরুষ হবে জ্ঞানী, বীর, ত্যাগী । পুষ্প বল্লে—কিন্তু মনে রাখবেন দেব, ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ যুগাবতার শ্ৰীকৃষ্ণ এই প্রেমভক্তির সাধনা শিখিয়েচেন--- —জ্ঞানেরও, কর্মেরও। তাতে তিনেরই অপূর্ব সমন্বয়। —শ্ৰীকৃষ্ণকে আপনি যাই বলুন, তিনি গ্রেমের দেবতা। প্রেমময়, ভাবময়, সৌন্দর্যময়— এই তার আসল রূপ । —তুমি নারী, তোমার পক্ষে ওষ্ট ভাবই স্বাভাবিক বটে। তবে জেনে রেখো, জগতের বছ গ্রহে বহু জীবকুল বাস করে । ভগবান প্রত্যেক গ্রহে অসীম বিশ্বের সমস্ত জীবকুলের সম্মুখে তাদের ভাবানুযায়ী মায়িক রূপ নিয়ে দেখা দেন। তিনি অসীম, অনন্তরূপী, তার কোনো শেষ নেই। কত লক্ষ শ্ৰীকৃষ্ণ আছেন, কত লক্ষ রামচন্দ্র আছেন তোমাদের পৃথিবীর তার মধ্যে—একথা মনে রেখে । —তাতে কি। সসীম মানুষ র্তার কোটি কোটি মায়িক রূপ ধারণা করতে পারবে না। একটিমাত্র স্বন্দর রূপের ধ্যানে সিদ্ধিলাভ করুক। তাহোলেই তাকে পাবে তো ? —নিশ্চয় । এ তে হোল সহজ পথ। ভক্তির পথ সহজ পথ, নারীর পথ । জ্ঞানের পথ বীরের পথ, পুরুষের পথ—সে কথা তোমাকে তে আগেই বলেচি। ভগবানকে পাবে—ও পথেও, এ পথেও ৷ 唱 পুষ্প বল্লে—সেই সহজ সুন্দর পথের সহজ সুন্দর দেবতা শ্ৰীকৃষ্ণ যদি আমার মনের গোপন মন্দিরে বিরাজ করেন, তবে আমার জন্মমরণ ধন্ত হবে, দেব । জীবনের এপারে বা ওপারে আর কিছুই চাইনে । এই সময়ে একটি স্বন্দরী নারী সেখানে এসে দাড়ালেন। তার মুখ অপূর্ব দিব্যভাবপরিপূর্ণ। অঙ্গকান্তি তরল জ্যোংলার মত, বড় বড় চোখ দুটিতে অসীম সারল্য ও অস্তমুখিতা। মহাপুরুষ