পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান Sứ 5 —যাও সেখানে ? —হঁ্যা, তা—যাই । যাবে—চলে না গায়ে একবার । যতীন গেল কুডুলে-বিনোদপুরে । পুষ্পের বারণ আছে এসব জায়গায় আসবার । এলেই পার্থিব আসক্তি ও তৃষ্ণ আত্মাকে পুনরায় জড়িয়ে ধরে। রামলাল ওর নিজের বাড়ীর দিকে চলে গেল, যতীন নিজের বাড়ী এল ; ওর ছেলেমেয়ে আছে শ্বশুরবাড়ীতে, কিন্তু তাদের ওপর এতদিন যতীনের কোনো বিশেষ মায়া ছিল না, এখানে এসে তাদের জন্তেও মন কেমন করে উঠলো। ওদের বাড়ীটা একদম ভেঙেচুরে জঙ্গল হয়ে পড়ে আছে এই সাত আট বছরে । ঐখানে ঐ ঘরে সে আর আশা থাকতো, আশার হাতের চুনের দাগ এখনও ইন্ট-বের করা দেওয়ালের গায়ে এক জায়গায়। ওখানে বসে আশা পান সাজতে, ষোল বছর আগের চুনের দাগ, কি তারও আগের হবে । বিয়েয় পরে প্রথমে আশা খুব পান খেতে এবং ওইখানটিতে বসে রোজ সকালে এক বাট পান সাজতো সমস্ত দিনের মত। গুজব উঠলো এই সময়, পানে একরকম পোকা হয়েচে, অনেক লোক মারা যাচ্চে পোকা-ধরা পান খেয়ে, যতীন আর বাজার থেকে পান আনতো না পাচ ছ’ মাস। আশা বলতো–তুমি না থাও, আমার জন্যে এনে, না হয় মরে যাবো পান খেয়ে,তোমার আবার বিয়ে বাকি থাকবে না । পান না খেয়ে থাকতে পারিনে—লক্ষ্মীটি— কাল যেন ঘটে গিয়েচে সে সব দিন। আশা, আশালত। স্বপ্ন’, . বহুদূর অতীতের স্বল্প আশালত । সন্ধ্যা হয়েচে । বোষ্টম বৌ ছাগল নিয়ে যাচ্ছে বাড়ীতে তাড়িয়ে—আহ, বুড়ো হয়ে পড়েচে বোষ্টম বোঁ । তা তো হবেই, আট বছর হয়ে গেল। আচ্ছা তাকে যদি এখন দেখে বোষ্টম বে। তে] কি না জানি ভাবে ] 尊 হঠাৎ পেছন থেকে কে বলে উঠলো—তুমি কখন এলে গো ? যতীনের অন্তরাত্মা পর্যন্ত বিস্ময়ে শিউরে চমকে উঠলে সে পরিচিত কণ্ঠের ডাকে। লে পেছন ফিরে চাইলে, আশা দাড়িয়ে আছে ঠিক তার পেছনে। পরনে লালপাড় শাড়ী, ঠিক যেমনটি পরতো কুডুলে-বিনোদপুরের এ ঘরে ; বয়েস তেমনি, চোখে না বুঝতে পারার বিশ্বয়ের মূঢ় দৃষ্টি । இ. —আশা ! তুমি এখানে ! কি করে এলে । আশা অবাক হয়ে ওর দিকে চেয়ে. আছে” যেন এখনো ভাল করে বিশ্বাস করতে পারচে না । 鱷 যতীন ওর দিকে এগিয়ে গেল হাত বাড়িয়ে । বঙ্গে—আশা, চিনতে পারচো না জামায় ? আশা ওর মুখের দিকে তখনও চোখ রেখে বল্লে—খুউ-ব । —তুমি কোথা থেকে এলে ? —কি জানি কোথা থেকে ষে এলুম। আজকাল কেমন হয়েচে আমার, সবই যেন কি মনে হয়। কোনটা সত্যি কোনটা স্বপ্ন বুঝতে পারিনে। সব ওলট-পালট হয়ে গিয়েচে কেমনতর।