পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬২ বিভূতি-রচনাবলী যতীনের দিকে চেয়ে তিনি মৃদু হেসে বলেন—মনে আছে ? যতীন তাড়াতাড়ি পায়ের ধুলো নিলে, পুপও তাই করলে । ক্ষেমাস চুপ করে বসে রইলেন । & তিনি আবার বল্পেন—মনে আছে ? বলেছিলাম সময় পেলে দেখা দেবো । এই সেই মেয়েটি বুঝি r এর তো খুব উচ্চ অবস্থা দেখচি। ক্ষেমাসের দিকে চেয়ে বল্পেন-কবি যে ! কি করচ বসে বসে ? ক্ষেমদাস বল্লেন— তোমাদের মত সমাধির চেষ্টায় আছি— * —ও তোমাদের অনেক দূর। মায়িক-জগতের বন্ধন তোমাদের এখনও কাটেনি। আবার এদেরও মাথা খাচ্চ কেন ও কথা বলে ? —আমিও ঠিক ওই কথাই তোমায় বলতে পারি। অদ্বৈত-ব্রহ্মজ্ঞান-ট্যান এই সব কচি কচি ছেলেদের মাথায় ঢোকাচ্চ কেন ? n সন্ন্যাসী হেসে ক্ষেমঙ্কাসের কাছে এসে দাড়িয়ে সম্মেহ স্বরে বল্লেন—তুমিও ঐ দলেরই একজন। কবি কিনা, মিথ্যা কল্পনার রাজ্যে বাস করো। পুষ্প সময় বুঝে বল্পে—প্ৰভু, জানেন এর প্রতি পুনর্জন্মের আদেশ হয়েচে । সন্ন্যাসী বল্পেন—নয়তো কি ভেবেচ ইনি মায়ার অতীত হয়ে যাতায়াতের চক্রপথ এড়িয়ে ব্ৰহ্মত্ব লাভ করেচেন ? আত্মানং বিদ্ধি-আত্মাকে জানো—আত্মাকে না জানলে যাতায়াত বন্ধ হবে না— ক্ষেমদাস বলে উঠলেন—বয়েই গেল। ক্ষতিটা কি ? \-বাজে কথা বলে না কবি। তোমার ক্ষতি না হতে পারে। তোমার মত চোখ আর মন নিয়ে ক’জন পৃথিবীতে যাবে ? সাধারণ লোক গিয়ে অর্থ, যশ, মান, নারী নিয়ে উন্মত্ত থাকবে। প্রকৃতির সৌন্দর্য মায়ার খেলা হোক—তবুও স্বীকার করি, দেখতে জানলে তা দেখেও স্বষ্টিকর্তা হিরণ্যগর্ভের প্রতি মাহুষের মন পৌঁছতে পারে। ও যে একটা সোপান । কিন্তু তা ক'জনের চোখ থাকে দেখবার ? আর্তের সেবা করে ক'জন ? কাজেই মানুষের দুঃখ যায় না। মনে আনন্দ পায় না ; ভোগ করতে করতে একদিন হঠাৎ আবিষ্কার করে জরার অধিকার শুরু হয়েছে। তখন মৃত্যুভয়ে বলির পশুর মত জড়সড় হয়ে থাকে। তা ছাড়া আছে শোক,বিচ্ছেদ, বিত্তনাশ, অপমান, আশাভঙ্গের যন্ত্রণা। কোথায় মুখ বলে ? —দুঃখের মধ্যেই আনন্দ হে সন্ন্যাসী-দুঃখ ভোগ করতে করতেই আত্মা বড় হয়ে ওঠে, রীতস্পৃহ হয়, বীতময় হয়, বতশোক হয়। ভগবানের দিকে মন যায়। জন্মে জন্মে আত্মা বললাভ করে, জন্ম-জন্মান্তরের চিতার আগুনে পুড়ে সে ক্রমশ নির্মল, শুদ্ধ, জ্ঞানী হয়ে ওঠে। ভগবানেরই এই অবস্থা–এ তুমি অস্বীকার করতে পারো ? ক’জন তোমার মত নর্মদাতীরে সারাঙ্গীরন, তপস্যা করে ভগবানের দর্শন পেয়েচে ? বন্ধ ভূগে, বহু ঠকে, বহু নারী, স্বর, অর্থ রিক্ত ভোগ করে মানুষ ক্রমশ বিষয়ভোগ থেকে নিবৃত্ত হয়ে আসে—বৰ জন্ম ধরে এমন চলে —তখন জন্ম-জন্মান্তরীণ স্থতি তাকে বলে আবার কোনো নতুন জন্মে—ও থেকে নিবৃত্ত হও,