পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

cवर्षांन ১৭১ লোকের কয়েকটি মহাপুরুষের সঙ্গে পরামর্শ করেচেন। তারা বলেন, পৃথিবী এখনও তৈরী হয়নি। গ্রহদেব বৈশ্ৰবণ কয়েকজন শক্তিমান আত্মা পাঠাচ্চেন পৃথিবীতে, এরা ধ্বংস ও দ্বদৈব. আনবেন পৃথিবীতে গিয়ে । পৃথিবী আলোড়িত হবে—লোকের দৃষ্টি উধ্বমুখী হবে। ভোগবাদ ও জড়বাদের অবসান না হোলে জীবের মঙ্গল নেই । ঢেলে সাজাতে হবে গোটা পৃথিবীটাকে । আপনিই তো ইচ্ছা করলে করতে পারেন। সন্ন্যাসী মৃদ্ধ হেসে চুপ করে রইলেন । যতীন অসতর্ক মুহূর্তে সবিস্ময়ে বলে উঠল—কে ? ইনি ! ক্ষেমদাস বলেন-হঁ, ইনি। অসাধারণ শক্তিশালী পুরুষ, ওঁর গ্রহদেবের সমান। ইচ্ছামাত্র স্বষ্টি স্থিতি প্রলয় ঘটাতে পারেন। ব্রহ্মস্থত্রে বলেচে-সংকল্পাদেব তৎশ্রীতে: মুক্তপুরুষের সমস্ত ঐশ্বর্য সংকল্পমাত্র উদয় হয় । সন্ন্যাসী হেসে বল্পেন—ঝোকের মাথায় একটু বেশি বল্লে কবি । ভোগমাত্রমেষাম অনাদিসিদ্ধেনেশ্বরেণ সমানমূ—শঙ্করাচার্য কি বলেচেন প্রণিধান কর। মুক্তের ভোগ ঈশ্বরের সমান হয়, শক্তি কি তার সমান হয় ? —আমি ঈশ্বরের কথা বলিনি, গ্রহদেবের কথা বলেচি । —গ্রহদেব শক্তিমান বটে কিন্তু ঈশ্বরের বিনা অনুজ্ঞায় তিনি কিছুই করতে পারেন না। — স্বষ্টি স্থিতি প্রলয় করতে সমর্থ কিনা ? —হঁ্যা । কিন্তু ঈশ্বরের অনুমতিক্রমে । —আপনি ? —না । আমার ওপর সে ভার স্বাস্ত নেই। আমি আদার ব্যাপারী, হষ্টি স্থিতির খোজে আমার দরকার কি ? স্বষ্টি বলচেই বা কাকে ? নিগুৰ্ণ ব্ৰহ্ম যখন দেশ ও কালের সীমার মধ্যে নিজেকে প্রসারিত করেন, তখন তাকে বলে স্থাই –উর্ণনাভ যেমন নিজের দেহনিঃস্থত রস তন্তুরূপে প্রসারিত করে । রঘুনাথদাস বল্পেন—মহাপুরুষ, ক্ষেমদাস ঠিকই বলেচেন। আপনি পারেন সব, অসাধারণ শক্তি আপনাদের । সেই শক্তি নিক্রিয় অবস্থায় কোনো কাজে আসচে না । ভগবানের দাসভাবে ভক্তভাবে তাকে সেবা করে সেই শক্তির সদব্যবহার করুন। কিংবা পৃথিবীর বা অন্য গ্রহলোকের জীবকুলের সেবা করুন। জীবের সেবার স্বয়ং ভগবান তীর পার্শ্বচরদের নিয়ে সর্বদা নিযুক্ত। আপনি মহাজ্ঞানী, আপনাকে আমি কি উপদেশ দেধ ? সন্ন্যাসী বিনীতভাবে নমস্কার করে বল্পেন—আপনার আদেশ শিরোধার্য। যতীন অবাক হয়ে ভাবলে, এত বড় লোক, কিন্তু কি অদ্ভুত বিনয় এদের । সত্যি, বড় ভাল লাগচে । ক্ষেমদাস হঠাৎ বলে উঠলেন—বৃন্দাবনে আরতি হচ্চে গোপাল-মন্দিরে । আমি আর থাকতে পারবো না । চল । e আজও পৃথিবীতে স্বন্দর জ্যোৎস্না । বৃন্দাবনের বনপথে আলোছায়ার খেলা দেখে ওরা সবাই