পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

» ፃor রিভূতি-রচনাবলী হয় না। শরীরের বাধুনি কি ! আমি তো কোনো অনিষ্ট করচিনে কারো, বসে থাকি এই क्षणं । —নিজের অনিষ্ট নিজেই করচে। ওপরে উঠতে পারবে না। পৃথিবীর বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে । —থাকি থাকবো। বেশ ফুর্তিতেই আছি—আমি ওপরে উঠতে চাইনে, নীচেও নামতে চাইনে। স্বগগেটগগে তোমরা থাকে গিয়ে! আর ওই বুড়োটা যে দোকানের গণিতে বসে আছে দিনরাত, তাতে বুঝি দোষ হয় না ? ওটাকে পারে তো তোমাদের স্বগগে নিয়ে যাওঁ টেনে । আমাকে ছেড়ে দিয়ে যাও এখানে, বেশ আছি । কেন আর জালাও দাদা, বেঁচে থেকে এমন আনন্দে থাকিনি। বেঁচে থাকতে এমন করলে আমায় ওর স্বামী লাঠি নিয়ে তাড়া করতো—এ বেশ আছি, কেউ টের পায় না। —চলে আমার সঙ্গে এক জায়গায়, তোমায় নিয়ে যাবে।— & —আমায় মাপ করো ভাই । সোনামণিকে ফেলে আমি পাদমেকং ন গচ্ছতি— —থাকৃ, আর দেবভাষাকে ধ্বংস করে লাভ নেই! এখন আমার সঙ্গে চলো—যাবে ? রামলাল যতীনের ইঙ্গিতে সোনা বাগ দিনীর বাড়ীর উঠোন থেকে অল্পদূরে একটা বঁাশঝাড়ের তলায় গিয়ে দাড়ালো। কতদিন পরে শীতের দিনে ঝরা শুকনো রাশপাতার ধুলোভরা গন্ধ আজ যতীনের নাকে এসে লাগচে । যেন সে দেহেই বেঁচে আছে—পৃথিবী মায়ের বুকের দুলাল । বনমুলোর গাছ কুচি কুচি সাদা ফুলে ভর্তি—দু’চারটে বাশঝাড়ের পরেই দিগন্তব্যাপী ধানের ক্ষেত, সবে ধান কাটা হয়ে গিয়েচে অম্ৰাণের শেষে । শুকনো ধানের গোড়া এখনো ক্ষেতের সর্বএ । যতীন বোধ হয় একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল, রামলাল অধীর ভাবে বল্লে—কি বলচে। বলো যতীনদ । যতীন বল্পে -ও কি ? আবার ওপাড়ার পুকুরঘাটের দিকে চাইচো কেন ? কে আছে ওখানে ? রামলাল দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বল্লে--নাঃ-বামুনের মেয়ে। —আবার কি ? —ওই যে সাদা কোঠাবাড়ীটা-ওই বাড়ী থেকে রোজ বেরিয়ে পুকুরঘাটে নায় । বামুনबांफ़ौ । . - –তাই হয়েচে কি ? —ষোল সতেরো বছর বয়েস । দেখবে ? এসো, এলো—এতক্ষণ নামচে জলে । নামটি বেশ, সন্ধ্যারাণী। ফর্সা, একরাশ চুল, একটু পরে ভিজে কাপড়ে নেয়ে বাড়ী ফিরবে। মুখখানি বড় চমৎকার। ছিপছিপে লিকলিকে সরু বেতের মত হেলে পড়ে পড়ে। মুক্তোর মত ঝকৃঝকৃ করে দাঁতগুলো যখন হাসে। সর্বদাই হালচে। —তাতে তোমার কি ? —জামার কিছু না । বামুনের মেয়ে । ওরা মুখুয্যে।