পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান Nbr(t পাশে ও শুয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। স্থবি বল্লে—আমাদের বাড়ী দুটি ভাত খাবি আশা ? —দূর, তোরা জেলে। জেলের বাড়ী বুঝি বামুনের মেয়ে খায় ? —মুকিয়ে ? স্থবি হাসলে । ওর বডড বন্ধু স্ববি। কষ্ট হয় স্থবির মনে দুঃখু দিতে। তবু সে বল্লে— না ভাই স্ববি, কিছু মনে করিসূ নি। আমার বাড়ীতে ভাত তো হয়েইচে– —বড়ি-ভাতে তাত খাবিনি আমার সঙ্গে ? মা নতুন বড়ি দিয়েচে– —দুর, বড়ি বুঝি এখন দেয় ? বড়ি দেয় সেই মাঘ মাসে । নতুন কুমড়ে নতুন কলাই-এর ডাল উঠলে। মিথ্যে কথা বলিস্নি স্ববি। —মিথ্যে বলিনি । পুরোনো ডালের বুঝি বড়ি হয় না ? চল আমার সঙ্গে— আশা বাড়ী ফিরচে। বেলা অনেক হয়ে গিয়েচে । মুখুয্যেদের পুকুরঘাটে আর কেউ নাইচে না, সবাই নেয়ে ৰাড়ী চলে গিয়েচে । তেঁতুলের ডালে মোটা মোট কাচা তেঁতুল ঝুলছে দেখে ওর জিবে জল এল । ছটো তেঁতুল পাড়লে হোত । কিন্তু কি করে পাড়ে ? স্ববিকে বল্পে হোত, সে অনেক রকম বুদ্ধি ধরে, একটা কিছু উপায় করতে পারতো। পুকুরপাড়ের সরু রাস্তা ধরে খানিকদূর গিয়ে ওদের বাড়ী। সারি সারি পেঁপে গাছ । একটা ধানের গোলা । তাদের মুচিপাড়ার ধানের ক্ষেত থেকে বছরের ধান এসে গোলা ভর্তি হয় । এখুনি সব চোখে পড়বে। কিন্তু একটু যেন অন্যরকম । se পেঁপে গাছের সারি নেই । ধানের গোলা নেই । তাদের বাড়ীর চট-ওঠা ভাঙা পাচিলটা নেই। এ কোথায় সে যাচ্ছে ? তাদের বাড়ীটা নয়। আতঙ্কে ওর বুকের মধ্যে যেন টেকির পাড় দিতে লাগলো। বাড়ীউলি মাসীর বাড়ীর সেই দ্বোরটা । মানিকতলার বাড়ীউলি মাসী । আশা চীৎকার করে পেছনে ফিরে পালাবার চেষ্টা করতেই নেত্যনারাণ দোর খুলে বের হয়ে এসে বল্পে—কোথায় ছিলে এতক্ষণ চাদ ? কাল দু’এক ঘা দিয়েছিলাম বলে রাগ হয়েচে বুঝি ? তারপরেই সে আশার মুখের কাছে হাত নেড়ে নেড়ে ইতরের ভঙ্গিতে গাইলে তুড়ি দিতে দিতে— 射齡 鸚 দুটো কথা কি তোমার প্রাণে সয় না ? একঘরে ঘর করতে গেলে ঝগড়া কি, প্রাণ, হয় না ? দুটো কথা কি— এসে এসে শোবে এসে।--বেলা হয়ে গিয়েচে । বাধবিদ্ধ হরিণীর মত আশা ছটফট করতে লাগলো নেত্যনারাণের হাতে । • তারপর সে দুম দুম করে নিষ্ঠুরভাবে মাথা কুটতে লাগলো ঘরের চৌকাঠে । সে আজ মরে যাবে। এ কলঙ্কিত জীবন সে রাখতে চায় না। ব্যথা লাগচে, রক্তারক্তি হচ্চে–কিন্তু লে মরতে