পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবযান 3వీ4 কেঁদে ফেললে । হাত জোড় করে বল্লে—আমার একমাত্র সম্বল ভগবানে ভক্তি, আর আমার কিছু নেই জীবনে। দেব, দয়া করে সেটুকুও আমার কাছ থেকে কেড়ে নেবেন না—ব্রুপ করুন—আমি নিতাস্ত অভাগিনী । o o ক্ষেমদাস হেসে বল্লেন—পাগল ! সেই অনন্ত মহাশক্তির এক দিকই কেবল দেখবে ? রুদ্রদেবের বাম মুখ দেখলেই ভক্তি চটে যাবে অত ঠুনকো ভক্তি তোমার অন্তত সাজে না। তুমি আমি তার উদ্দেশ্যের কতটুকু বুঝি ? চলো ফিরি। ওই জন্য আনতে চাইনি তোমাকে এখানে । এতেই এই, এর চেয়েও নিকৃষ্ট লোকে নিয়ে গেলে— --না দেব. আমায় পৃথিবীতে অন্তত নিয়ে চলুন। আমাদের পৃথিবীতে-চলুন গঙ্গাতীরে— মহাশূন্ত বেয়ে সেই মুহুর্তে ওরা এসে পৃথিবীতে একস্থানে বৃক্ষতলে দাড়ালে । বর্ষাকাল পৃথিবীতে, ভীষণ বৃষ্টি হচ্চে । স্থানটা পাহাড়ে ঘেরা, পাহাড় ঝাপসা হয়ে গিয়েচে বৃষ্টির ধারায় । ক্ষেমদাস বল্লেন–নিয়ে এলাম গঙ্গাতীরে। ওই অদূরে গঙ্গা– —এটা কোন স্থান ? —হরিদ্বার । পুষ্পের চোখ জুড়িয়ে গেল ধারামুখর অপরাত্ত্বের বহুপরিচিত, অতি প্রিয় শোভায়। তার মন বলে উঠলো—এই তো আমাদের পৃথিবী, আমাদের স্বর্গ। ভগবান এখানে কত ফুলে ফলে নিজেকে ধরা দেন, কত জ্যাৎস্নার আলোয়, কত অসহায় শিশুর হাসিতে । আজ চিনলাম তোমায় ভাল করে, আমাদের মাটির স্বৰ্গকে, আর চিনলাম মানুষকে । মানুষই মাটি দিয়ে গড়া দেবতা—দুদিন পরে সত্যিকার দেবতা হয়ে যাবে। জয় নীলারণ্য-কুন্তলা অতল-সাগর-মেখলা চিরন্তনী সুন্দরী পৃথিবীর । জয় জয় মাঙ্গবের । জয় বেণুরব-শিহরিত দিগন্তলীন-প্রাস্তর-শোভিত৷ ভূতধাত্রী মাতার । • ক্ষেমদাস বল্পেন—এৰার তোমার মন শাস্ত হয়েচে । বড় চঞ্চল হয়ে উঠেছিল। এখন একটা কথা ৰলি । কি দেখে অস্থির হয়ে উঠলে ? পুপ সলঙ্গ হেসে চুপ করে রইল। ক্ষেমদাস বলেন-না, বলে, বলতেই হবে। ভগবান কি নিষ্ঠুর—এই ভেবেছিলে । না ? -ई । —তিনি কি নিষ্ঠুর-ও ! এই তো ? পুষ্প হাসি-হাসি মুখে নির্বাক । 縣 R ক্ষেমদাস বল্পেন—তোমার মত মেয়েরও বিস্মৃতি ? তোমারও ভুল ? একেই বলে মোহিনী মায় । মায়ায় কে না ভোলে ? “ব্রহ্মা বিষ্ণু তলিয়ে যান। —কেন দেব, বলুন ! — না, তাই দেখচি। নতুবা তোমারও ভুল ! —থাক্ আমার ব্যাখ্য' । আমি তৃণের চেয়েও হীন । আপুনি কি উপদেশ করচেন, তাই করুন না ?