পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপলখও Rම් ও যদি আসতো তবে খুব ভালো লাগতো । মনের মধ্যে ডুব দেবার সময় আমার নয় তখন, তবুও কি যেন একটা হয়ে গেল, এত বাজনা, এত খাবার-দাবার,এত লোকজনের যাতায়াত, আমার নতুন কাপড় গয়না-কিছুই ভালো লাগলো না । মনে উৎসাহ নেই। & আগেই বলেচি আমার বিয়ে হয়েছিল আড়ংঘাটার কাছে শিকারপুরে। স্বামীর বয়সও সতেরো-আঠারোর বেশি নয়, রোগা চেহারা, মাথার চুল-ওঠা। বিয়ের পরে জানা গেল স্বামী ম্যালেরিয়ার পুরনো রোগী। মাসে দুবার ম্যালেরিয়া জর বাধা আছেই। আড়ংঘাটার যুগলকিশোর ঠাকুরের মেলার সময় ময়রার দোকান খোলেন আমার খুড়খণ্ডর, স্বামী তাড়ু দিয়ে সন্দেশ-মুড়কী ভিয়েন করেন। 将 শ্বশুরবাড়ীতে যাবার সময় মনে খানিকটা কৌতুহল নিয়ে যে না গিয়েছিলাম এমন নয়। না জানি কেমন বাড়ী-ঘর, কেমন খাওয়া-দাওয়া। গিয়ে দেখি, পুরনো আমলের ইট-বেরকরা কোঠাবাড়ী, দুটি মাত্র ঘর, ছোট একটা বারান্দ, তবে সব ঘরগুলির সামনে গান-বাধানে টানা রোয়াক এবং রান্নাঘরটিও কোঠা । খুব বড় একটা আম গাছ সমস্ত বাড়ীর উঠোন জুড়ে ঘুপসি করে রেখেচে । আমার শাশুড়ী গর্বের স্বরে বল্লেন-আমের সময় তো আসচে, দেখো বোমা। এমন জাম এ অঞ্চলে নেই আমার বাগানে যা আছে, ডাকসাইটে বাগান, কর্তা করে রেখে গিয়েছিলেন, এস্তেক গোস্বাড়ি, এস্তেক শান্তিপুর, কোথা থেকে কলমের চারা এনে না পুতেচেন । আমের সময় এল, কোথা থেকে ব্যাপারীরা এসে বাগান কিনে নিলে। দু-এক ঝুড়ি অাম যা আমাদের বাড়ী এল, তা থেকে দুটো-একটা জুটল আমার ভাগ্যে । শাশুড়ী নিতান্ত বাজে কথা বলেন নি, আম ভালো । . স্বামীর সঙ্গে আলাপ জমলে মন্দ নয় । ক্রমে তাকে ভালোও লাগলো। আমায় বজেন—তুমি কি খেতে ভালোবাসো ? আমি লজ্জা-টজার ধার ধারিনে, বলে ফেল্লাম – তেলেভাজা খাবার । স্বামী বল্লেন—দুর । অমন বোকা মেয়ে কেন ? ভালো খাবারের নাম করে। ’ —গজা । জিলিপি । - cकन थांछ ? —সে আবার কি গা ? আমাদের গায়ে শুনিনি তো । 婚 উনি হো হো করে হেসে বলেন-পাড়াগেয়ে ভূত ! আমাদের এ শহর বাজার জায়গা। কাল খাজা আনবো লুকিয়ে। কিন্তু সাবধান, মা যেন টেৱ না পায়। বকুৰে । আমি নিজে খাজা ভিয়েন করি । সেই থেকে মাঝে মাঝে স্বামী লুকিয়ে লুকিয়ে খাবার আনেন। কোনোদিন খাজা, কোনোদিন মিহিদান। আমরা দু’জনে লুকিয়ে খাই। স্বামী বলেন—সবাইকে দিতে গেলে চলে না। খুড়তুতে ভাইয়েরা ইসের পাল, সবার মুখে দিতে গেলে তোমার আমার মুখে এক টুকরে উঠবে কি ন-উঠবে।