পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপলখণ্ড e,ჯ করতে লাগলো। খুড়শাশুড়ী বল্পেন—ভালোই হলো চলে গেল, স্ববুদ্ধি হয়েচে । বামুনের মুখ আমন করে হাসাতে হয় ? ছিঃ ছিঃ– তারপর মুখ টিপে হেসে বল্পেন—বোমার বাপের বাড়ীর লোক। খুব কষ্ট হয়েচে বোমী তোমার –না ? যখন-তখন দেখা হোত তো । অন্ত গা থাকতে এ গায়ে এসেছিল সেজন্তেই হয়তো, তবুও তো দেশের ঘরের লোক আছে একটা । ছিলে-খোলা ধন্থকের মত সটাং সোজা হয়ে বলে উঠি—নিশ্চয়ই । আমার কষ্ট তো হুবারই কথা । হরি কলু একদিন সন্তাল জ্যাঠার কাছে বল্লে—অমন মাহুৰ হয় না । ছোট ভাইট বেঁচে উঠলো, পায়ে ধরতে গেলাম, বলি তুমি ব্রাহ্মণ, আমার ঘরে হেনস্থ কাজ আর করতে দেবো না । দু’মাসের মাইনে বাকি, একটা পয়সাও নিয়ে গেলেন না যাবার সময় । হঠাৎ পালিয়ে গেলেন । আমায় যেন ক্যামা করেন তিনি । হাত জুড়ে সে উদ্দেশে প্রণাম করলে । আবার ফান্ধনে বনে বনে ফুল ফুটেচে, আবার কোকিলের ডাক পথে পথে। মুচুকুন্দ চাপার স্বগন্ধে ঘাটের রানা ভুরভুর করে। আমি একদিকে যেন সম্পূর্ণ নিঃস্ব । জ্যাঠামশায়ের বৈঠকখানায় যোগবাশিষ্ঠ শুনতে যাই রোজ বিকেলে । সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে রিক্ত হয়েই বোধ হয় সেখানে পৌছুতে হয় । দৈবাৎ গিরীন ঘোষের আড়ত বন্ধ হয় রাত নটায়। সারাদিন খাতা লেখা। ভাল লাগে এ কাজ ? কখন খাইয়া-দাইয়া বাড়ী হইতে সে বাহির হইয়াছে। ছোট ছেলেটির অসুখ, বিনয় ডাক্তারকে ডাকার কথা, গিয়াছিল কি না কে জানে। ছ টাকা ভিজিট খরচ। তাছাড়া হয়তো ঔষধ আনিতে বলিবে ডাক্তারখানা হইতে। ঔষধের দামও পড়িবে টাকা-দুই । কালী চৌধুরী বিরক্তির সঙ্গে আড়ত বন্ধ করিল, দরজায় চাৰি লাগাইয়া দিল। একজন খরিদার বসিয়া বসিয়া ঢুলিতেছিল দাওয়ায়। তাহাকে ডাকিয়া বলিল—ওগো কওঁ, আজ তোমার দর ঠিক হবে না। আজ যাও, রাত হয়েছে। কাল সকালে এসে ঘোষ মশায়ের সঙ্গে কথা ব'লো । o 幡 ভাঙা সাইকেলটির চাবি খুলির রাস্তায় বাহির করিয়া চড়িয়া বসিল। ফুটফুটে জ্যোৎস্নারাত, একটু একটু হাওয়া বহিতেছে মাঝে মাঝে । তাহার গ্রাম সাতবেড়ে, তিন মাইল পথ । বড় রাস্ত হইতে নামিয়া ফেসৌহাটির মাঠের মধ্যে এক মাইল কাচা রাস্তা। বর্ষাকালে সাইকেল অচল, এখন কার্তিক মাসের শেষ, তাই ধুলা ঠেলিয়াও কোনরকমে চালানো চলে। আট টাকা মাহিনায় পোষায় এত ? মাইল-টাক গিয়া মুচিপাড়া পার হইয়া বড় অশথগাছটা