পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

இ8 4. —ওগো ধানের জমি যায় যাক গো, ভিক্ষে করে খাব। তুমি খোকাকে বাচাও । তাহাই হইল শেষ পর্যন্ত। খোকাও বাচিল না, ধানের জমিও গেল। ননীবালা পুত্ৰশোকে ভাঙিয়া পড়িল। অনাহারশীর্ণ শরীরে ঢুকিল জোর ম্যালেরিয়া, চিকিৎসাপত্র চলে না, পথ্য জুটানোও দুষ্কর। কালী চৌধুরী একদিন সাতপাচ ভাবিতে ভাবিতে নোটের বাগুিল খুলিয়া ফেলিল। এক দুই তিন করিয়া গুনিল, পাচ হাজার টাকা ঠিক আছে। এ তহবিল হইতে আপাতত কিছু ধার লইলে কেমন হয় ? কিন্তু শোধ হইবে কেমন করিয়া ? দশ বিশ টাকা লইলে মাহিনীর টাকা হইতে শোধ দিবার কোন উপায় নাই। পুলিশ যখন আসিয়া বাড়ী ঘেরাও করিয়া ফেলিয়া টাকা চাহিবে, তখন ? সেদিন ননীবালা অনেক রাত্রে স্বামীকে ভাকিয়া বলিল—হঁ্যাগা, খোকা কদিন গিয়েছে ? কালী চৌধুরী স্ত্রীর মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিল—কেন, সে কথা কেন এখন ? ' ও কথা বলে না । —বল না গো ? —তা জু মাস । —তাকে কোথায় দিয়েছিলে ? —ঐ নদীর ধারে জামতলার শ্মশানে। তুমি ঘুমোও । --না, শোন । তার ছিটের জামাটা গায়ে ছিল ? —সে কথা কেন এখন ? —বল না ? —ছিল । -আমি জানি। শোন বলি। —কি ? —থোকা এই জানলায় দাড়িয়ে ছিল, সেই ছিটের জামাটা গায়ে দিয়ে। সন্ধ্যেবেলা— —ও সব কিছু না । তুমি ঘুমোও । —জুমি দেখলাম যে— —ও কিছু না । —খোকা অামায় ডাকছে। সে কি একটা বলছে আমি বুঝতে পারছি নে । —আঃ, ঘুমোও না চুপটি করে। ও সব চোখের ভুল। ননীবালা আর কোন কথা বলিল না। কালী চৌধুরী ঠিক করিল, কাল সকালে নোটের বাণ্ডিল হইতে দশটা টাকা বাহির করিয়া খরচ করবে। নোট পাইয়াছে আজ চার মাস। কেহ খোজ করে নাই এ পর্যন্ত। বোধ হয় কেহ খোজ করিবেও না । পরদিন সকালে উঠিয়া কালী চৌধুরী বিমল ডাক্তারের ডাক্তারখানায় ঘাইবে, স্বান করিয়া