পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 বিভূতি-রচনাবলী —কি করে জানলি আমি এ পথে - ? —ছাদ থেকে দেখি তুমি হাড়ি হাতে আসছ। আচ্ছা চলি—খবরদার, কোন কথা জার ধেন নন্দি মুখের কথা শেষ না করে পিঠের ওপর ঝোলানো লম্ব বেশী দুলিয়ে ছুটে পালাল । কিন্তু বিক্ষিত বিষ্ণু কয়েক পা যেতে না যেতে নন্দি আবার ওকে ডেকে বললে—ও বিষ্ণুদা, শোন একটা কথা, ও বিষ্ণু-থা— —কি রে ? --শোন, সরে এস আর একটু— —কি ? —তোমার সাহস আছে ? —কেন ? —আমায় নিয়ে পালিয়ে যেতে পার ? বিষ্ণু কথাটা ভাল করে যেন বুঝতে পারলে না, ইতস্তত করে বললে পালিয়ে ?...কি রকম ? তোকে নিয়ে ?--তা— নন্দি ঘাড দুলিয়ে বাকিয়ে এক অপূর্ব ভঙ্গি করে বললে—বুঝেছি। খুব পুরুষমানুষ তুমি ! সময় নেই, ই কি না জবাব চাই। আমি যা বলব তুমি তাতে রাজি আছ ? সাহস হয় ? --তা কেমন করে সম্ভব নন্দি ? —ও ! কেন অসম্ভব শুনি ? —দূর পাগলী! তা হর না। —হয় না কেন ? —এ কি ছেলেখেলা নন্দি-কত কথা ভাবতে হবে। টাক। কোথায় ? রাখব কোথা ? মা-বাবা-কি ভাববেন ? —যেন আমার কিছু ভাববার নেই! আমার মা-বাপ নেই ? বুঝতে পেরেছি তোমাদের বিস্তে। এই তুমি পুরুষমানুষ । আচ্ছা তুমি যাও— স্তম্ভিত ও হতবুদ্ধি বিষ্ণুকে আর কিছু বলবার অবকাশ না দিয়েই নন্দি একছুটে ওদের বাড়ীর খিড়কির দোরের মধ্যে গিয়ে ঢুকে পড়ল। . নন্দির সঙ্গে তার আর দেখা হয়নি, কেবল হয়েছিল অতি অল্পক্ষণের জন্যে বিয়ের রাত্রে। কস্তা-সম্প্রদান সমাধা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষ্ণু ওদের বাড়ী থেকে চলে এসেছিল, নিমন্ত্রণ খেতেও বসেনি গ্রামের নিমন্ত্রিত ব্রাহ্মণদের সঙ্গে । বিয়ের পরদিন সকালে নন্দির ছোট বোন মালতী ওকে পথে দেখে বললে—কাল কোথায় পালালে বিষ্ণুৱা? নিদি হবার তোমাকে ডাকতে পাঠালে। বাসরঘরে আমার চুপি চুপি বললে—বিষ্ণুদাকে ডেকে নিয়ে আয়। আমি তোমায় কোথাও দেখতে পেলাম না। বামুন