পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপলখণ্ড & X ७ कि एल ? আমার সেই ছেলেবেলাকার শাবলতলার মাঠ কোথায় গেল ? সত্যিই তা নেই। তার বদলে আছে কতকগুলো তাবুর সারি, ইটখোলা, পাথুরে কয়লার’ তুপ, চুনের টিবি, কাঠের ঢিবি, লোকজনের হৈ চৈ, লরির ভিড় । s আজ সকালে মার্টিন লাইনের ছোট স্টেশনে নেমেছি, গরুরগাড়ী করে চলেছি পিসিমার বাড়ীর গ্রামের পাশের একটা গ্রামে মেয়ের বিয়ের পাত্র খুজতে । রাস্তার ধারে পড়ে শাবলতলার মাঠ । হঠাৎ দেখি এই অবস্থা তার । গরুরগাড়ীর গাড়োয়ানকে বলি-হ্যারে, এটা শাবলতলার মাঠ, না ? —হঁ্যা বাবু। —কি হচ্ছে এখানে ? —কি জানি বাৰু, কলকারখানা বসছে বোধ হয় । —কতদূর নিয়ে ? —তা বাবু অনেক দূর নিয়ে—উই বাজিতপুর, মনসাতলা, ছাওয়াল-মারি, বেদে-পোতা, ইাসখালির চড়া পর্যস্ত । —গ্রামগুলো সব কোথায় ? —সব উঠিয়ে দিয়েছে। মনে পড়ল আমার এগার বছর বয়সের একটি মধ্যাহৃদিন। আর মনে পড়ল দুর্গাপুর উচ্চ প্রাইমারি স্কুলের উমাচরণ মাস্টারকে । উমাচরণ মাস্টার কতদিন থেকে দুর্গাপুর ইউ পি পাঠশালার হেডমাস্টারি করছিলেন তা আমি বলতে পারব না । গ্রামের রায় জমিদারদের ভাঙা কানিসে পায়রার বাসাওলা বৈঠকখানার একপাশে সেকেলে তক্তপোশে ছিল তার বাসা। দেওয়ালে তার ইকো ঝুলত পেরেকের গাঙ্কে, বাশের আলনায় তার দ্বখানা আধময়লা ধুতি ও এক এবং অদ্বিতীয় পিরানটি আলতো করে ঝোলানো থাকত—আর থাকত তক্তপোশের নীচে একজোড়া কাঠের খড়ম। একটা টিনের বিবর্ণ তোরঙ্গ।. একটা চটের-থলে ভর্তি টুকিটাকি জিনিস। একখানা পাক বঁাশের লাঠি এবং—সেইটেই বেশি করে মনে আছে—একগাছ তেলে-জলে পাকানো বেত । উমাচরণ মাস্টার আবার বই লিখতেন । আমি তখন অল্পবয়স্ক, লেখক বা সাহিত্যিকের যশোগৌরব সম্বন্ধে আমার ধারণা তখন খুবই অস্পষ্ট—তবুও মাস্টারমশায় যখন ক্লাসের টেবিলের ওপর পা তুলে গম্ভীরভাবে তার লেখা আঙ্কেল গুডুম বই পড়তেন—তখন আমরা ক্লাসমৃদ্ধ ছেলে বিস্ময় ও প্রশংসাভরা দৃষ্টিতে র্তার দীর্ঘগুম্ফযুক্ত বসন্তের দাগ-জাক প্রৌঢ় মুখমণ্ডলের দিকে চেয়ে থাকতাম। w স্থ্যা-ৰ্তার বইএর নাম ছিল ‘আকেল গুডুমা—তিনি বলতেন ‘প্রহসন’ , আমার যা বয়স তখন তাতে আঙ্কেল গুডুম' বা ‘প্রহসন দ্বটাে কথার একটারওঁ মানে বুঝতাম না। মনে