পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@心 বিভূতি-রচনাবলী এমন সময় সারদা শ্লপাতে হাপাতে এসে বললে—শীগগির—শীগগির আয়—দেখে যা— আমরা সবাই একসঙ্গে বলে উঠলাম— কি হয়েছে রে ? বেঁচে আছেন তো ? • কথা বলতে বলতেই আমরা সারদার পেছনে ছুটলাম। বেশ খানিকটা দূর দৌডে সারদা থেমে পডল এবং আঙল দিয়ে সামনের দিকে দেখিয়ে আমাদের চুপ করতে বলে পা টিপে টিপে এগিয়ে চলল । একটা শুকনো খাল-মত নীচু জায়গায় কুঁচঝোপের আডালে উমাচরণ মাস্টার বসে বসে ঝুকে পড়ে কি লিখছেন সেই আর-একদিনের মত। জায়গাটাতে খুব ছায় পড়েছে। কুঁচঝোপটায় পাখীরা কিচির কিচির করছে--সামনে অনেকদূর ফাকা। সুন্দর জায়গাটি । এই মাঠের মধ্যে এই জায়গাটাই সব চেয়ে ভাল । কবি উমাচরণ মাস্টার ঝু”কে পড়ে লিখতে লিখতে বিড বিড করে আপনমনে কি বকছেন, এমন কি আপনমনে ফিক ফিক করে হাসছেনও। যে কেউ দেখলে বলবে উন্মাদ পাগল । অমন তন্ময় হয়ে লিখতে আমরা তাকে কখনও দেখিনি, অমন ভাবে আপনমনে হাসতেও তাকে কখনও দেখিনি ীি সতু মুগ্ধদৃষ্টিতে সেদিকে চেয়ে বললে—মাস্টার মশাই একজন আসল কবি । সারদা ওর মতে মত দিয়ে বললে—ঠিক তাই । কানাই ও আমি কোন কথা না বলে একদৃষ্টে এই সত্যিকার জীবন্ত কবিকে চেয়ে চেয়ে দেখতে লাগলাম। আমাদের কত ভাগ্যি যে আমরা এমন মাস্টার পেয়েছি। কানাই একটু পরে বললে—কিন্তু ভাই, সন্ধ্যে হল । ওঁকে না ডাকলে আমাদের উপায় কি হবে ? ডাকি ওঁকে । কি বলিস ? কেউ সাহস করে না । সারদার মনে কবির প্রতি শ্রদ্ধা একটু ফিকে, সে দু-একবার আমাদের উপস্থিতি জ্ঞাপক কাসির আওয়াজ করলে । সতু চুপি চুপি বললে –এই ! আস্তে ! সারদ বললে--হঁ্যা, আস্তে বই কি ! আমরা মরি এখন এই মাঠের মধ্যে সম্বোবেলা । বাঘে ধরুক সবসুদ্ধ—বলে সজোরে একবার কাসির আওয়াজ করতেই উমাচরণ মাস্টার চমকে পেছন ফিরে চাইলুেন। সারদা বললে—আসুন মাস্টার মশাই, সন্ধ্যের দেরি নেই যে—ইস্টিশান এখনও অনেকখানি রাস্ত— • উমাচরণ মাস্টার ব্যস্ত হয়ে খাতাপত্র গুটিয়ে বগলে করে নিয়ে আমাদের কাছে উঠে এলেন শুকনো খাল থেকে। অপ্রতিভের হাসি হেসে বললেন—তাই তো, বেল গিয়েছে দেখছি। চল চল ! তারপর পেছনদিকে চেয়ে বললেন—জায়গাটা বড় চমৎকার—না ? সতু সশ্রদ্ধ স্বরে বললে—gখানে কি করছিলেন মাস্টার মশাই ? কি আছে ওখানে ? উমাচরণ মাস্টার ধমক দিয়ে বললেন—সে কি তুই বুঝবি? সিনারি কাৰে বলে