পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপলখণ্ড ፃ » গরিবের ঘরে পড়িয়া মেয়েটা কত কষ্টই পাইতেছে, তবু এ বুড়া তো তাহাকে একটু আনন্দ দিতে পারিল । এই সময় হরিচরণ দোকান হইতে ফিরিল । দালানের বাহিরে" তাহার আসিবার শব শুনিয়া বীণাপাণি দালান হইতে সরিয়া গেল । একটু পরে সে যখন রান্নাঘরে লুচি ভাজিতে বসিয়াছে, হরিচরণ সেখানে আসিলে বীণাপাণি হাসিতে হাসিতে বলিল—আজ কি দেখাব বল দিকি ? কৃষ্ণলালবাবু হরিচরণকে গহনার সম্বন্ধে কোন কথা বলেন নাই, কারণ বলা তাহার পক্ষে একটু অশোভন হইত। হরিচরণ বলিল—কি ? ব্রেসলেট পাইয়া বীণাপাণির আনন্দ আর ধরিতেছিল না । সে ব্রেসলেটটা স্বামীকে দেখাইবার জন্য কেসে পুরিয়া কেসট রান্নাঘরে আনিয়াছিল। স্বামীর সঙ্গে একটু কৌতুক কুরিতে ইচ্ছা হইল, বলিল--আচ্ছা, একটুখানি চোখ বুজিয়ে থাক দিকি নি, আমি একটা ভেলকি দেখাব ৷ হরিচরণ বলল—কি, শুনি ? বীণাপাণি বলিল—আচ্ছ, বোজাও না একটু চোখ, দেখাচ্ছি। --আমি পিছন ফিরছি, কি দেখাবে দেখাও । বীণাপাণি কেস খুলিয়া নিজের হাতে পরিল, তার পর হাসিমুখে বলিল—চেয়ে দেখ এদিকে । হরিচরণ হঠাৎ চাহিয়া দেখিতেই যেন চমকাইয়া উঠিল। বলিল—কি ও ? বীণাপাণি বলিল—কি বল দেখি ? হরিচরণ নচু হইয়া স্ত্রীর হাতের উপর ঝুকিয়া পডিয়া দেখিতে লাগিল। সেও দরিত্রসস্তান, এরকম জিনিস কখনও দেখে নাই—ই করিয়া অনেকক্ষণ ব্রেসলেট-জোড়ার দিকে চাহিয়া রহিল। বীণাপাণি সকৌতুকে বলিল - কোথায় পেলাম বল দেখি ? হরিচরণ বলিল—উনি দিলেন বুঝি ? দেখি— । তাহার পর ব্রেসলেটের পাথরগুলির উপর সন্দিগ্ধভাবে হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিল-এগুলো বোধ হয় কাচ । * এরকম কাচবসানো আংটি তো দেখেছি –কলকাতা থেকে হরিগায়ের মেলায় বিক্রি করতে আনে—এর দাম বেশি নয় । ৰীণাপাণি বিজ্ঞ জহুরীর মত মুখখানা গম্ভীর করিয়৷ বলিল—হঁ্য, কাচ ! এসব পাথর, খুব দামী পাথর । হরিচরণ বলিল-তুই কি করে জানলি পাথর ? তুষ্ট পাথর চিনিম । বীণাপাণি মুখ হইতে বিজ্ঞতার বোঝা ভাল করিয়া না নামাইয়াই বলিলু—জেঠামশায় বললেন যে ৷