পাতা:বিভূতি রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড).djvu/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী ويمb স্বামলাল মোক্তার জিজ্ঞাস্ব দৃষ্টিতে ওর দিকে চাইলেন। ভাবটা এই রকম—বলে ফেল বাপু যা আছে পেটে। অমন অনেক ঘুঘুই আমরা দেখলাম, তুমি এখন বাকি আছ। , ইচু রামলালবাবুর পা-দুটো জড়িয়ে ধরে বললে–বাৰু, মোর একটা দরবার আছে। যাতে হয় আপনি তা দেখবেন—মুই গরিব লোক, জন খেটে খাই, আপনার পয়সা হয়তো মুই দিতি পারব না, গরিব বলে দয়া করে একটা আবদার রাখবেন মোর—আল্লা, দিনজুনিয়ার মালিক, আপনার ভাল করবে । —আহা-হু, পা ছুয়ো না—কি—কি বল— —বাবু, ঝেখানে মোরে রাখে, বা করে ক্ষেতি নেই। কিন্তু বাবু, আপনি এইটে তাদের বলে দেবেন, ব্যবস্থা করে ঝেন পাচ-ওক্ত নামাজ আমি সেখানে পড়তি পারি—আর কিছু আমার বলবার নেই বাৰু । * রামলালবাবুর সেরেস্তায় বজ্রপাত হলেও লোকে অতটা চকিত হোত না ( সেকালের নভেলের বর্ণনা অনুযায়ী)। হাফেজ ও বছরদ্ধি আবার পরম্পর মুখ চাওয়াচাঞ্চুরি করলে। ঘুঘু মোক্তার রামলাল চাটুজ্যে ই করে ওর মুখের দিকে চেয়ে রইলেন । এ রকম কথা এ সময় তিনি সামান্ত একজন গ্রাম্য লোকের মুখ থেকে আশা করেন নি, যে খুনের দায়ে আজ পথেই হয়তো পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হবে, আজ বাদে কাল যাকে দায়রায় চালান দেওয়া হবে—শত অসুবিধা, অর্থনাশ, নির্বাতন যার সামনে, আর আইনের খাড়া যার মাথার ওপর ঝুলছে—নিষ্ঠুর নিয়তির হৃদয়হীন ৱক্তাক্ত ইঙ্গিতের মত । রামলালবাবুই সেদিন বার লাইব্রেরিতে গিয়ে গল্প করেছিলেন—সত্যি অবাক হয়ে গেলাম ভায়, যখন লোকটা ও কথা বললে। আজ যাকে পথেই অ্যারেস্ট করবে পুলিশে, কাল পুরবে হাজতে, যার সব যেতে বসেছে—সে যে ওই ধরনের রিকোয়েস্ট করতে পারে তা আমার মাথায় আসেনি। আমি আগে ভেবেছিলাম বুঝি কনফেস করবে। সামান্ত একজন লোক—আমার চোখে জল এসে পড়ল ভায়া । ওরা সব চলে গেল। ইচু শেখকে ওরা বাজার থেকে পেটভরে তেলেভাজা সিঙাড়া কচুরি আর মুড়ি খাওয়ালে । হাফেজ বললে—ওরে চাড়ি হোটেলের ভাত খাইয়ে নিলি হোত । পুলিশি খরলি কোথায় নিয়ে যাবে, আজ খাওয়া হবে কি না ঠিক তো নেই। কিন্তু অত-সকালে হোটেলে ভাত পাওয়া গেল না । রাস্তা চলতে লাগল সবাই। দুপুরের কিছু দেরি আছে, ইচু পথের পাশে এক বটতলার छ्ब्रॉब्र নামাজ পড়তে বসল। আর কোন কথা ওর মনে থাকে না। কিরঝিরে हॉeब्रांञ्च श्रांछ পথের ধারের গাছতলায় অপূর্ব আনন্দ ও শাস্তি নেমে আসে.প্রাণে নামাজের সময় । সে সব ভুলে যায়। চোখে যেন জল আসে। নিমি কত ভাত রোধে দিয়েছে—কত আদর-যত্ন করেছে। তার চরিত্র খারাপ ছিল । সে কিছু জানে না। নিমির জন্তে বুকের মধ্যে একটা বেদনা। নিমিকে সে খুন করবে ? কাউকে কখনও খুন করার কথা তার মনে আলেনি। আল্লা সাক্ষী আছেন সব কাজের । ভয় কি ? মালিক যা করবেন তাই হবে ?